আসছে বাজেটে বাড়বে শতাধিক পণ্যের দাম

25

কাজির বাজার ডেস্ক

প্রস্তাবিত বাজেটে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশে শতাধিক পণ্যের ওপর থেকে ভ্যাট অব্যাহতি কমানো ও প্রত্যাহার এবং সম্পূরক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাজেট ঘোষণার পরই এসব পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
দাতা সংস্থার চাপে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঙ্কের ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা। চলতিবারের চেয়ে আগামী অর্থবছরে ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি ভ্যাট আদায় করতে হবে এনবিআরকে। বাড়তি ভ্যাট আদায় করতে গিয়ে এনবিআরকে অনেক পণ্যের ওপর ভ্যাটের হার বাড়াতে হচ্ছে। ভ্যাটের হার বাড়ানোর জন্য নতুনভাবে ভ্যাট আরোপ করতে হচ্ছে, ভ্যাট অব্যাহতি বা প্রত্যাহার ও সম্পূরক শুল্ক আরোপ করতে হচ্ছে। কোন কোন পণ্যের ওপর থেকে ভ্যাট অব্যাহতি ও প্রত্যাহার এবং সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হবে তার চ‚ড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এরই মধ্যে এ তালিকায় সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে এমন অনেক পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তালিকায় সাবান, শ্যাম্পু, অনেক গৃহস্থালি সরঞ্জাম (হোম অ্যাপ্লায়েন্স) থাকার কথাও সূত্র জানিয়েছে। ওষুধের অনেক কাঁচামালও রাখা হয়েছে এ তালিকায়। এসব কাঁচামাল ব্যবহার করে ওষুধ উৎপাদন করলে তার খরচ বাড়বে। ন্যূনতম লাভ রেখে বিক্রি করলেও ওই সব ওষুধ আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হবে। অন্যদিকে শিল্পে ব্যবহৃত অনেক রাসায়নিকও আছে এখানে। মোবাইলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়ানো হচ্ছে। লিফট, মোবাইল ফোনসেট ও বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ি, আমদানি করা মোটরসাইকেল, আমদানি করা মোবাইল হ্যান্ডসেট, বিদেশি বিস্কুট, চকলেট, আমদানি করা জুয়েলারি ও প্রসাধনীরও দাম বাড়ানো হচ্ছে।
বাজেট প্রস্তাব ঘোষণার পরই এসব পণ্যের ওপর ভ্যাটের হার বেড়ে যাবে। আর এতে পণ্য কিনতে হলে বেশি দাম দিতে হবে।
প্রযুক্তি খাতে ভ্যাট অব্যাহতি কমানো ও প্রত্যাহারে কাজ করছে এনবিআর। এর মধ্যে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে ভ্যাট অব্যাহতি কমাতে হিসাব চলছে। আর এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের খরচ বাড়বে। দেশি মোবাইল হ্যান্ডসেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সার্ভার, মাদারবোর্ড ও এ জাতীয় পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বাড়তি ভ্যাট আদায় করতে হলে এনবিআরকে অবশ্যই বিভিন্ন খাতে ভ্যাটের হার বাড়াতে হবে এমন মত জানিয়ে সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান ড. মো. আবদুল মজিদ বলেন, ‘ভ্যাট যোগ করে পণ্যের দাম হিসেবে আদায় করা হয়। আমাদের দেশে বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ না জেনেই তা পণ্যের দাম হিসেবে পরিশোধ করে থাকে। ভ্যাট রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে নিরাপদ হাতিয়ার। রাজস্ব আদায়ে চাপ থাকলেই এনবিআর সহজ পথ হিসেবে ভ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে আদায় করে।’