ছাতকে ৩ জন ইউপি সদস্য প্রার্থীর আশা-নৈরাশ, বাস্তবে জীবিত থাকলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে দুইজন মৃত

11

ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকে ৩ জন ইউপি সদস্য প্রার্থীর আশা নৈরাশ। বাস্তবে জিবিত থাকলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে দুইজন মৃত।
একজন প্রার্থীর নিজ ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে ভোট স্থানান্তর করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। এমন কার্যকলাপে ইউপি সদস্য প্রার্থীরা পড়েছেন হতাশায় দুশ্চিন্তায়। সংশোধনের জন্য তারা উপজেলা নির্বাচন এবং ইউএনও অফিসে আসা যাওয়া অব্যাহত রাখলেও কোন সুফল পাচ্ছেন না। ফলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়াটা তাদের পক্ষে অনেককাংশে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে তারা অনেকটাই মানু্সকি ভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। এমন ঘটনায় এলাকার সচেতন মহলকে রিতিমত ভাবিয়ে তুলছে বিষয়টি।
জাতীয় পরিচয়পত্র যাছাই করে জীবিত মানুষদ্বয়কে মৃত বিষয়টি প্রার্থীরা যেমন সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন তেমনি জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই বাচাই কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচন অফিসের দায়িত্বশীলদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল। এ বিষয়ে রোববার (১০ অক্টোবর) ছাতক উপজেলা নির্বাচন কমিশনার বরাবরে পৃথক তিনটি অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্য প্রার্থী আলী আহমদ, কমর আলী ও ছিদ্দেকুর রহমান নামের ভূক্তভোগিরা।
উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ব্রাক্ষণগাঁও গ্রামের মৃত আসক আলীর পুত্র মো: আলী আহমদ ও তার দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে সম্ভাব্য মেম্বার প্রার্থী হিসেবে ৮নং ওয়ার্ডে তিনি নির্বাচন করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। এ বছরও তার আগ্রহ ছিল নির্বাচনে অংশ নেয়ার। গত ১ জুলাই গোবিন্দগঞ্জ পূবালী ব্যাংক শাখায় একাউন্ট করতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানান তার (৯০১২৩৮৫৫৭৬১৭৪) জাতীয় পরিচয়পত্রটি অনলাইনে দেখাচ্ছে না। পরে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানতে পারেন জাতীয় পরিচয়পত্রে তাকে মৃত দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রটি বাতিল করা হয়েছে। ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ব্রাক্ষণগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়াল এর পুত্র মো: কমর আলী’র জাতীয় পরিচয় পত্রেও তাকে মৃত দেখিয়ে বাতিল করা হয়েছে। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ড থেকে ইউপি সদস্য প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সম্প্রতি করোনার ভ্যাকসিনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (৯০১২৩৮৫৫৭৬৩০৯) নিয়ে নিবন্ধন করতে গেলে তা হয়নি। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাওয়ার পর জানতে পারেন তিনি মৃত !
এ জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রটি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চাকল পাড়া গ্রামের মো: আব্দুল আমিনের পুত্র মো: ছিদ্দেকুর রহমানকে ৯নং ওয়ার্ডে ভোট স্থানান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাচন কমিশন পৃথক একটি অভিযোগে উল্লেখ করেন, এওয়ার্ডে মেম্বার পদে নির্বাচন করার জন্য তিনি গনসংযোগ করছেন। কিন্তু গত ৯ অক্টোবর একটি ফরম পূরণ করতে গেলে জানতে পারেন তিনি ৭নং ওয়ার্ডের ভোটার না! একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বেরাজপুর গ্রামে তার ভোট স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাকে নির্বাচনে প্রার্থী থেকে বঞ্চিত করার জন্য বর্তমান জনপ্রতিনিধিসহ নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে এমন কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান জানান, জীবিত মানুষকে মৃত দেখানোতো পাপ কাজ। তিনি এমন কাজের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তদন্তের মাধ্যমে অন্যায়কারীদের চিহিৃত করে দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তি হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। পৃথক তিনটি লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. ফয়েজুর রহমান জানান, এগুলো কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।