কাজিরবাজার ডেস্ক :
নগরীর টিলাগড়স্থ প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের অধীনস্থ ছাগল গবেষণা খামারের পাঠা চাওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা রনজিত সরকারসহ ১০ আসামী জামিন পেয়েছেন। গতকাল সোমবার সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালত তাদের এই জামিন মঞ্জুর করেন। মামলাটি করেছিলেন সিলেট বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ড. আমিনুল ইসলাম। জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী পৃথ্বিশ দত্ত। তিনি জানান, আদালত মামলার ১০ আসামিকেই জামিন প্রদান করেছেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রনজিত সরকার, ছাত্রলীগ নেতা কনক পাল অরূপ, রাহুল চৌধুরী, অপু তালুকদার, মিঠু তালুকদার, আকাশ, সাহেদ, সৌরভ দাস, রুহেল ও শামীম আলী। এদের মধ্যে কনক পাল ও সৌরভ দাসকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারা কারাগারে ছিলেন।
এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম চলছে না। তবে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে সীমিত পরিসরে আদালতের কার্যক্রম চলছে। তবে ভার্চুয়াল কোর্টে শুধুমাত্র কারাগারে থাকা আসামিদের জামিন শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু ‘পাঠাকাণ্ডের’ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন দু’জন। তাহলে বাকিদের জামিন শুনানি কিভাবে হলো, এমন প্রশ্ন ওঠেছে।
জানা গেছে, মামলার আসামিরা আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিশেষ অনুমতিপত্র নিয়ে এসেছিলেন। আর এ প্রেক্ষিতেই আদালত জামিন শুনানি করেছেন।
বিশেষ অনুমতিপত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করে এডভোকেট পৃথ্বিশ দত্ত বলেন, আদালতে জামিন শুনানি করেন জেলা বারের সভাপতি। তিনিই অনুমতিপত্রের ব্যবস্থা করেন। আমি বিস্তারিত জানি না।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে সিলেট জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর নিজাম উদ্দিনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গত ১১ মে নগরীর টিলাগড়স্থ প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের অধীনস্থ ছাগল গবেষণা খামারে গিয়ে ফাও (ফ্রি) পাঠা চেয়েছিলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পাঠা না পেয়ে তারা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা কাজী আশরাফের উপর হামলা চালান। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ড. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহপরান থানায় (নং-৪/২০২০) মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১১ মে দুপুরে টিলাগড়ে সিলেট বিভাগীয় ছাগল গবেষণা খামারে কয়েকজন যুবককে পাঠান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার। যুবকরা খামারে প্রজননের জন্য রাখা একটি পাঠা (ছাগল) ফ্রি দেওয়ার জন্য বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ড. আমিনুল ইসলামের কাছে আবদার জানায়। ড. আমিনুল পাঠা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা গালিগালাজ করে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর দলবল নিয়ে রনজিত সরকার সেখানে গিয়ে কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হন। এসময় তিনি অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা কাজী আশরাফের উপর হামলা চালান। অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও লাঞ্ছিত করেন তারা।