প্রধানমন্ত্রীর ১০ বিশেষ উদ্যোগ গতিশীল করার নির্দেশ

2

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা মহামারী মোকাবেলা করে উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিতে সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেয়া ১০ বিশেষ উদ্ভাবনী উদ্যোগ গতিশীল করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দারিদ্র্য দূর করে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আগামী ২০ বছর সামনে রেখে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করেছে সরকার। এর মধ্যে সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়তে স্বল্পোন্নত থেকে দেশকে উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদায় নিয়ে যেতে এলডিসি থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে যাওয়া, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অর্জন, মধ্যম উচ্চ আয়ের পথ সুগম করা এবং বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার মতো চারটি স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে- এই চার স্বপ্ন পূরণে দশ উদ্ভাবনী উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্যোগগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে আরও আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
করোনা সংক্রমণ কমে আসা এবং দ্রুত টিকা কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় দেশে স্বস্তি ফিরে এসেছে। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেয়া হবে। এছাড়া দ্রুত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং উন্নয়ন কর্মকা- গতিশীল করতে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ১০ বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে এলডিসি উত্তরণসহ দ্রুত দারিদ্র্য শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারপ্রধানের নেয়া ১০ উদ্যোগ হচ্ছে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে অর্থহীনে অর্থ এবং কর্মহীনের কর্মসৃজন করা হয়। বিপন্ন মানুষের আশ্রয় ও গৃহহীনের জন্য রয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। জনগণের দোরগোড়ায় রাষ্ট্রীয় সেবা পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে আছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। এছাড়া শিক্ষাহীনদের জন্য শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচী, সুবিধাবঞ্চিত গরিব ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীর শিক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট, সব ক্ষেত্রে নারীর অর্থবহ অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থসামাজিক ও মানবসম্পদ উন্নয়নে ঘরে ঘরে বিদ্যুত, অসহায় নাগরিকদের সুরক্ষায় সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক ও শিশু বিকাশ, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ বিকাশ ও দূষণমুক্ত বাসযোগ্য সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পরিবেশ সুরক্ষা।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্ভাবনী বিষয়ে উদ্যোগসমূহের সমন্বয়কারীদের সঙ্গে পর্যালোচনামূলক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব দ্রুত সময়ের মধ্যে ১০ উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, করোনা কমে আসা এবং টিকা কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। তবে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হলে প্রধানমন্ত্রীর ১০ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।
জানা গেছে, করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে অর্থনীতিতে পুরোমাত্রায় গতি সঞ্চার করতেই এবার ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। চলতি বাজেটে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাজেটে অর্থমন্ত্রীর দিক নিদের্শনা রয়েছে। ইতোমধ্যে রূপকল্প-২১ বাস্তবায়ন, অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন, দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং এমডিজি অর্জনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাফল্য আসায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের লক্ষ্যে শত বছরের রূপরেখায় ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০’ বা ব-দ্বীপ পরিকল্পনা নামে আরেকটি স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। চলতি বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘জাতির পিতার তুলিতে আঁকা স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাবে, এগিয়ে যাবে অনেক দূর-বহুদূর, বহুদূর নিরন্তর।’ দীর্ঘমেয়াদী এসব স্বপ্ন পূরণের দিক নির্দেশনা রয়েছে বাজেটে।
জানা গেছে, জাতিসংঘের কাছ থেকে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত বা এলডিসি দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশের উত্তরণ ঘটায় এবার উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণে আরও জোরেশোরে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। করোনা সঙ্কটের কারণে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত এলডিসি দেশের সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। এরপর আর এলডিসির সুযোগ থাকছে না। এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় করোনা সঙ্কট ও চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার স্বার্থে সরকারী ব্যয় বাড়িয়ে টাকার অঙ্কে রেকর্ড বাজেট ঘোষণা করা হয়। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন দেশের উত্তরণ ঘটেছে। এরই হাত ধরে বিশ্ব সভায় বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়। এমনিভাবে অর্জিত হবে চার স্বপ্ন-২০৩০, ২০৩১, ২০৪১ এবং ২১০০ সালসহ সকল স্বপ্নের বাস্তবায়ন।
উল্লেখ্য, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি অর্জন করবে বাংলাদেশ। এলক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে এমডিজির মতো এবার এসডিজি অর্জনে দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে ২০২৬ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণ হবে। এছাড়া ২০১৩ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন পূরণের কথা জানিয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সমাজের প্রশংসা ও সম্মান কুড়িয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন সাধন করা। ২০৩১ সালে মধ্যম ও উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়া এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়া।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এগিয়ে চলার পাথেয় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা। অর্থাৎ তাঁর দেশ গড়ার সংগ্রাম, রাজনৈতিক দর্শন এবং অর্থনৈতিক পরিকল্পনাÑ যা বাস্তবায়ন করে চলেছেন অন্যতম বিশ্বনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ গড়ার এই অঙ্গীকার ও অগ্রযাত্রা পিতা-কন্যার সম্পর্ককে ব্যক্তিগত পরিধি ছাড়িয়ে বাঙালি এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে যুক্ত করেছে এক অনন্যমাত্রা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও পথ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাস্তবায়ন করে চলেছে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচী। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রধানমন্ত্রীর দশটি বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়নের ফল সুদূরপ্রসারী।
করোনা মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়া হবে : করোনা মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়া হবে। দেশের প্রতিটি মানুষ সরকারী সহায়তায় করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। করোনা সংক্রমণরোধ এবং মানুষের জীবন বাঁচাতে ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আমদানি করা হচ্ছে। এলক্ষ্যে সরকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। টিকা কিনতে ওই প্রকল্পে বিদেশী সহায়তা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে টিকাসহ করোনা মোকাবেলায় আরও ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রেখেছে। বিশ্বের অনেক উন্নত রাষ্ট্র তাদের জনগণকে টিকা দিতে ব্যর্থ হলেও ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানে সক্ষমতা অর্জনে বিশ্বে কয়েকটি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম আলোচিত হচ্ছে। আর এ কারণে বিশ্বের বড় বড় দেশ ও উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগ নিয়ে এদেশে আসার স্বপ্ন দেখছেন।
বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে এখন সেখানকার গার্মেন্টস খাতের বিনিয়োগকারীরা আবার বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে। এছাড়া ভিয়েতনামে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে সেখান থেকেও বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে বাংলাদেশ চলে আসছেন। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশ রফতানি ও রেমিটেন্স অর্জনে ভাল করছে। বিশেষ করে মিয়ানমার, ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশ থেকে এখন বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসছেন। তিনি বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনসহ বাংলাদেশের সামনে যেসব লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সফল হওয়া যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নির্দিষ্ট সময়ে চার স্বপ্ন পূরণ হবে : উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণসহ সরকার সামনে যেসব ভিশন রয়েছে তা নির্দিষ্ট সময়ে পূরণ হবে বলে প্রস্তাবিত বাজেটে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। গত ২০১৩ সালে নির্বাচনী ইশতেহার ‘রূপকল্প-২০৪১’ ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এতে বলা হয়, এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের পর্যায় পেরিয়ে শান্তিপূর্ণ, সুখী-সমৃদ্ধ এক উন্নত জনপদে পরিণত করা হবে। এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ‘রূপকল্প-২০২১’ শিরোনামে ইশতেহার প্রকাশ করেছিল। এছাড়া পরিবর্তনশীল বিশ্বে সমতা ও বৈষম্যহীন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ছয় বছর আগে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) স্থির করার পর যে তিনটি দেশ তাদের আগের অবস্থান থেকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করতে পেরেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক ২০২১ সালের অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতেই উঠে এসেছে এ চিত্র। এবারের এসডিজি সূচকে বিশ্বের ১৬৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। চার বছর আগে ২০১৭ সালের সূচকে ১৫৭টি দেশের মধ্যে ১২০তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের পর থেকে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোই এসব লক্ষ্য পূরণের পথে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে। আর ২০১৫ সালের পর থেকে এসডিজি সূচকে স্কোরের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে বাংলাদেশ, কোত দি ভোয়া (আইভরি কোস্ট) এবং আফগানিস্তান।
প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় অনুমোদিত হয়েছে ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণ- বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগামী দুদশকে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)’-এর গড় প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯.০২ শতাংশ হারে। প্রবৃদ্ধির এ পথ ধরে ২০৩১ সালের বাংলাদেশ হবে একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ। এ প্রসঙ্গে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, বর্তমান সরকারের দীর্ঘকালীন একটি রূপকল্প (ভিশন) আছে। সেটি কমপক্ষে ২০৪১ সাল পর্যন্ত। সেই ভিশন প্রশ্নাতীতভাবে উচ্চাভিলাষী, তবে সবচেয়ে কাক্সিক্ষত। উন্নত দেশ কে না হতে চায়! আমরা সবাই চাই, বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে, অবকাঠামোর উন্নতি হবে। তিনি বলেন, দেশের কর-জিডিপির হার এখন যেখানে আছে, এভাবে থাকলে লক্ষ্য অর্জন হবে না। তাই সরকারকে সবার আগে কর আদায়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
স্বপ্ন পূরণে অর্থায়ন বড় চ্যালেঞ্জ : এলডিসি থেকে উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় অর্থায়ন। তবে আশার কথা হলো, বাজেটে বিদেশী সহায়তা প্রতিবছর বাড়ছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ৯০ হাজার কোটি টাকার বিদেশী সহায়তা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া অবকাঠামো খাতে টাকা খরচের সক্ষমতা বাড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশন অর্থায়নের হিসাবটি করে দেখেছে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে আগামী ১৩ বছরে ৫ লাখ কোটি ডলার খরচ করতে হবে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।