টানা বিধিনিষেধে বস্ত্রখাতে সংকটের আশঙ্কা

7

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঈদুল আজহা সামনে রেখে চলমান বিধিনিষেধ আটদিনের জন্য শিথিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিথিলতা শেষে আরও ১৪ দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এবার কঠোর বিধিনিষেধের সময় শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) চলমান বিধিনিষেধ আটদিনের (১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত) জন্য শিথিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে আরও ১৪ দিনের (২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত) জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে ২৩টি শর্ত দেয়া হয়েছে, যেখানে বলা হয়, সব ধরনের শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসও।
এর আগে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ থাকলেও বস্ত্রখাত ছিল আওতার বাইরে। কিন্তু ২৩ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া বিধিনিষেধে বস্ত্রশিল্পসহ সব শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে। এতে এ খাতে গভীর সংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংকট বিবেচনায় আগামী বিধিনিষেধেও এ খাত আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন শিল্প উদ্যোক্তারা।
বর্তমানে পোশাক খাত অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলছে। অনেক ইস্যু ছিল এবং আছে। এখন বন্দরে কন্টেইনার সংকট, বিমানবন্দরে পণ্য ডেলিভারিতে দেরি হওয়া, সড়ক-মহাসড়কে রফতানির পণ্য চুরি হওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এসবের অনেকগুলো সমাধান হয়েছে, তবে পুরোটা সমাধান হয়নি।
এ বিষয়ে পোশাক শিল্প মালিক ও রফতানিকারক সমিতি বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান তুলে ধরেন পোশাক শিল্পের চলমান পরিস্থিতি।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পোশাক খাত অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলছে। অনেক ইস্যু ছিল এবং আছে। এখন বন্দরে কন্টেইনার সংকট, বিমানবন্দরে পণ্য ডেলিভারিতে দেরি হওয়া, সড়ক-মহাসড়কে রফতানির পণ্য চুরি হওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এসবের অনেকগুলো সমাধান হয়েছে, তবে পুরোটা সমাধান হয়নি।’
‘২৩ জুলাই থেকে ৫ আগষ্টের বিধিনিষেধের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিধিনিষেধের আগে মিটিং হয়, আমাদের বলা হতো। সেখানে আমরাও কিছু প্রস্তাব দিতাম। কিন্তু এবার আমরা কিছুই জানি না। হঠাৎ করে প্রজ্ঞাপন হওয়ার পরই মাথা ব্যথার কারণ হলো।’
তিনি বলেন, ‘এখনো অর্ডার আসছে, অনেক অর্ডারের পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে। তাদের সরবরাহ করতে না পারলে বায়ার রাখা যাবে না। কারখানা বন্ধ থাকলে উৎপাদন বন্ধ হবে, এতে পণ্য ডেলিভারি সম্ভব হবে না, বায়ারও বসে থাকবে না, তারা অন্য দেশে চলে যাবে।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘এখন একটিই উপায় আছে, আমাদের সবদিক বিবেচনায় রেখে সরকারের কাছে যাওয়া। আমরা সেটাই ভাবছি। আমরা চেষ্টা করছি, সরকারকে অনুরোধ করবো যেন বস্ত্রখাতকে এর বাইরে রাখা হয়। এমনটা হলে আগামীতে আমরা কর্মীদের বেতনও দিতে পারবো না। কাজ না হলে পণ্য ডেলিভারি হবে না। ডেলিভারি না হলে বায়ার তো টাকা পরিশোধ করবে না।’
গণপরিবহন বন্ধ নিয়ে তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন চলবে, আবার ঈদের পরই বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা শ্রমিকদের গ্রামে যাওয়ার বিপক্ষে না, তবে এবার আক্রান্তের হার অনেক বেশি। একজন শ্রমিক গ্রামে চলে গেলে সেখানে আক্রান্তের আশঙ্কাও আছে, এর মাঝে যদি পরিবহন বন্ধ হয় তাহলে বিপদ আরও বাড়বে। আক্রান্ত হলে গ্রামে ভালো হাসপাতাল কোথায়? ঢাকায় হাসপাতাল আছে, চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সব মিলিয়ে আমার অনুরোধ থাকবে সরকারকে এটা নিয়ে আরও ভাবতে হবে।’