পিন্টু দেবনাথ কমলগঞ্জ থেকে :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের দলই চা বাগান দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকায় শ্রমিক পরিবারে আর্থিক সহায়তা দানে মনু-ধলই ভ্যালীর ২৩টি চা বাগানের শ্রমিককেরা নিজেদের মজুরী থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সভাপতি-সম্পাদক, চা শ্রমকি ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে রবিবার (৯ আগষ্ট) সকাল ১১টায় দলই চা বাগানের সমস্যা নিয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মনু-দলই ভ্যালীর কার্যকরি কমিটির সভাপতি ধনা বাউরীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী, মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, মাসিক চা মজদুর পত্রিকার সম্পাদক সীতারাম বীন, চা শ্রমিক সংগঠন জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাসসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ২৩টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকবৃন্দ।
গত ২৩ জনু ধলই চা বাগানের ব্যবস্থাপক অন্যায়ভাবে সে বাগানের শ্রমিক রাধে শ্যাম ভরের সন্তানকে বেদড়কভাবে পিটিয়ে আবার উল্টো একটি মুচলেখা নিয়েছিল এক সপ্তাহের মধ্যে এ পরিবার দলই চা বাগান ত্যাগ করতে হবে। এর ফলে ২৩ জুন ধলই চা বাগানের চা শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করে চা বাগান ব্যবস্থাপকের অপসারণ দাবি করেছিল। এর পরচা বাগান কোম্পানীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দুই দফা সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে দলই চা বাগানে স্বাভাবিক কাজ কর্ম চলছিল। কিন্তু ২৭ জুলাই দলই চা বাগান বে-আইনীভাবে শ্রম আইন ১৩ ধারা ব্যবহার করে দলই চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরবর্তীতে আরও দুই দফা বৈঠক হলেও ধলই চা বাগান খোলার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এমতাবস্থায় দলই চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এজন্য মনু-দলই ভ্যালীর ২৩টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সম্পাদকদের উপস্থিতিতে এ মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ২৩ টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটি একত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা তাদের সাপ্তাহিক মজুরি থেকে ২০ টাকা করে প্রদান করবে দলই চা বাগান শ্রমিকদের জন্য। এ সিদ্ধান্তের সাথে অন্যান্য ভ্যালীর চা বাগান পঞ্চায়েতরাও দলই চা বাগান শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে আগ্রহী হয়েছে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, তাদের জোর দাবি অবিলম্বে দলই চা বাগান খুলে দিতে ও বিতর্কিত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে দলই চা বাগান থেকে অপসারণ করে নিতে হবে। অন্যতায় চা শ্রমিকরা আরও কঠোর আন্দোলন শুরু করবে।