দোয়ারাবাজারে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি

6

দোয়ারাবাজার থেকে সংবাদদাতা :
সপ্তাহকাল ধরে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি কমতে শুরু করায় আশায় বুক ভরে উঠেছিল বানভাসিসহ গোটা উপজেলাবাসীর। কিন্তু গত দু’দিনের অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয়ে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দ্রুত পানি বৃদ্ধিতে আবারও হতাশায় ভুগছেন অত্র অঞ্চলের মানুষ। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে ফসলসহ জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকায় উৎকন্ঠায় রয়েছেন হাওরপারবাসী।
পরপর দু’দফা বন্যার ক্ষত না শুকাতেই আবারও তৃতীয় দফায় বন্যা দিচ্ছে অশনি সংকেত। উপর্যুপরি বন্যায় তিন সপ্তাহকাল ধরে বীজতলাসহ ফসলি জমি পানির নিচে থাকায় রোপা-আমনসহ আগামি মওসুমি ফসল উৎপাদন অনিশ্চিত ভেবে পরিবার পরিজন ও গবাদি পশুর ভাগ্য বিড়ম্বনা নিয়ে শংকিত হাজার হাজার কৃষিজীবী পরিবার।
এ দিকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে চাল-ডাল, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধপত্র, ঢেউটিন ও নগদ অর্থসহ বিতরণকৃত ত্রাণ অপ্রতুল বলে জানান ভুক্তভোগি বানভাসিরা। এছাড়াও বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষতিগ্রস্তদের সঠিক তালিকা তৈরি করে বিধস্ত গৃহ নির্মাণ, চারা, বীজ, সার, কৃষি উপকরণ ইত্যাদি বিনামূল্যে বিতরণসহ ব্যাংকের সাবেক কৃষিঋণ মওকুফ করে বিনাসুদে নতুন ঋণ প্রদানের জোর দাবি জানান তারা।
এদিকে অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গত ৪৮ ঘন্টায় দুই ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুরমাসহ উপজেলার সকল নদনদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সীমান্তঘেষা বগুলা, সুরমা, লক্ষ্মীপুর, বাংলাবাজার ও নরসিংপুর ইউনিয়নসহ নিম্নাঞ্চলের হু হু করে পানি বাড়তে থাকায় নেমে যাওয়া অনেক বাড়িঘরে আবারও পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ফলে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে জনজীবনে। হাওর, খাল-বিল, মাঠঘাটে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকালয়ে আবারও পানি ঢুকছে। এ ছাড়া ফসলহানিসহ রাস্তাঘাটের অবর্ণীয় অবস্থায় বন্দি দশায় মানবেতর দিন কাটছে সকল পেশার লোকজনের। এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত দমকা হাওয়াসহ প্রবল বর্ষণ ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।