স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট বিভাগীয় ট্যাংক লরির শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো: ইকবাল হোসেন রিপন হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইজাজুল (২৮) ও রিমু (২৮) আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে তারা সিলেট মেট্রোপলিটন ৩য় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এছাড়া রিপন হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে দক্ষিণ সুরমা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিভাগীয় ট্যাংক লরির শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
পুলিশ জানায়, শ্রমিক নেতা রিপন হত্যার ঘটনায় স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় এজহার নামীয় প্রধান আসামি হচ্ছে ইজাজুল ও ২নং আসামি হচ্ছে রিমু। ইজাজুল বরইকান্দিস্থ ১নং রোডের মৃত ফরিদের পুত্র ও রিমু একই এলাকার মৃত ফারুক মিয়ার পুত্র।
এদিকে গত রবিবার এ মামলার অপর এজহারভুক্ত ৬নং আসামি সেবুল হাসান (৩৮) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল হানিফ বাস কাউন্টারের সামনে থেকে ঢাকা পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করে। গতকাল সোমবার পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। সে দক্ষিণ সুরমা থানার বরইকান্দিস্থ গাংগু ১নং রোডের লিলু মিয়ার পুত্র। এ মামলার ১৩ আসামীর মধ্যে এ পর্যন্ত এ হত্যাকান্ডে আদালতে আত্মসমর্পণকারী ২ জনসহ মোট ১১ জন আসামী কারাবন্দী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন জানান, ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ রিপন হত্যা মামলার এজহারভুক্ত আসামি সেবুলকে গ্রেফতার করে। তিনি জানান, পুলিশী অভিযানের ভয়ে পেয়ে বাধ্য হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে মামলার এজাহারনামীয় অপর আসামী ইজাজুল ও রিমু আদালতে আত্মসমর্পণ করে। তারা সিলেট মেট্রোপলিটন ৩য় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। পুলিশ এ সময় ওই আদালতে আসামী ইজাজুল, রিমু ও সেবুল হাসানের বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায়। পরে রিমান্ড শুনানী শেষে আদালত তাদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল পুলিশ ওই ৩ আসামীকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করছে বলে জানান ওসি আক্তার হোসেন।
অপরদিকে, নিহত মোঃ ইকবাল হোসেন রিপনের খুনি ইজাজুল ও রিমু সহ সকল আসামীদের ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। ২০ জুলাই গতকাল সোমবার বিকেলে সিলেট নগরীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে সিলেট বিভাগীয় ট্যাঙ্কলরি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ রিপনের খুনিদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকনেতা রিপন খুন হওয়ার পর থেকে খুনিরা আত্মগোপনে চলে যায়। পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কারণেই খুনিদেরকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। বক্তারা বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে ২০ জুলাই সোমবার হত্যা মামলার প্রধান দু’ আসামী ইজাজুল ও রিমু সিলেট মেট্রোপলিটন ৩য় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। বক্তারা রিপনের অন্যান্য খুনিদের গ্রেফতার করে ফাঁসি কার্যকর করার জোর দাবী জানান।
এ সময় বক্তব্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় ট্যাঙ্কলরী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মনির হোসেন, সহ-সভাপতি কাউছার আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল আজিজ, সহ সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, অর্থ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন, প্রচার সম্পাদক মোঃ গোলাপ খান, লাইন সম্পাদক কবির খান, কার্যকারী সদস্য বশির মিয়া, আব্দুল জলিল প্রমুখ এছাড়াও অসংখ্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দক্ষিণ সুরমা বিভিন্ন স্থানে রিপনের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।