চট্টগ্রাম উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী ॥ পুননির্বাচন দাবি বিএনপির

13

কাজিরবাজার ডেস্ক :
চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদ। তিনি পেয়েছেন ৮৭ হাজার ২৪৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান পেয়েছেন ১৭ হাজার ৯৩৫ ভোট। চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম স্থাপিত অস্থায়ী কার্যালয় থেকে সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় এ ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার মোঃ হাসানুজ্জামান। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা ও নগরীর একাংশ নিয়ে গঠিত এ আসন। রাত সাড়ে ৮টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৭০ কেন্দ্রের সবকটি কেন্দ্রের ফল পাওয়া গেছে। এতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ৬৯ হাজার ৩১১ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। ফল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মোছলেম উদ্দিন আহমদকে অভিনন্দন জানান।
উল্লেখ্য করা যেতে পারে, মোছলেম উদ্দিন আহমদ চট্টগ্রামের একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা। দীর্ঘসময় তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির হাল ধরেন। বর্তামানেও তিনি ওই পদে বহাল আছেন। চট্টগ্রাম-৮ আসনের এমপি মইনউদ্দিন খান বাদলের ইন্তেকালের পর আসনটি শূন্য ঘোষিত হয়। সোমবারের এ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়।
এর আগের খবরে বলা হয়, কয়েকটি কেন্দ্রে হট্টগোল, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, প্রার্থী লাঞ্ছিত হওয়ার দাবিসহ বিচ্ছিন্ন আরও কিছু ঘটনা নিয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে উপনির্বাচন। প্রশাসনের পক্ষে সার্বিকভাবে এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে তথ্য দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারদলীয় তথা আওয়ামী লীগ প্রার্থী সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তবে বিএনপি প্রার্থী ও তার সহযোগী নেতৃবৃন্দ বেলা ১১টার পর নির্বাচন স্থগিত করা ও পুনঃনির্বাচন দেয়ার দাবি জানান। লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি এ দাবি জানিয়েছেন। বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একই কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে বিএনপির এ প্রার্থী বা তার দলের পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের কোন ঘোষণা দেয়া হয়নি। বিকেল ৫টায় ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। এরপর শুরু হয় গণনা। বিভিন্ন কেন্দ্রে ফল গণনায় সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারি ৬ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ এগিয়ে রয়েছেন।
সোমবারের এ উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে সব ধরনের ব্যবস্থা কার্যকর ছিল। র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ, এপিবিএন সদস্যদের টহল ছিল জোরদার। ফলশ্রুতিতে রক্ত ঝরার মত কোন ঘটনা ঘটেনি। অবাধ-শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য ও ১১ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। মোতায়েন করা হয় ৫ প্লাটুন বিজিবি, ৬ প্লাটুন র‌্যাব। এছাড়া ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিজিবির সঙ্গে মোবাইল টিমে থাকবেন বলে জানান সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান।
বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান ভোট প্রদানের পর উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, কোথাও নির্বাচনের কোন সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মী সমর্থকরা কেন্দ্র দখল করে রাখে। তারা কেন্দ্রের সামনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ভোটারদের প্রবেশে বাধা দিয়েছে। অলমোস্ট সবকেন্দ্র থেকেই ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে, একই কেন্দ্রে কিছুক্ষণ পরে এসে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, কোথাও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি প্রার্থী ও তার দলের নেতাদের বিভিন্ন অভিযোগের বিপরীতে মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপির কাজই হল অভিযোগ করা। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অনেক আগে থেকেই এ কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরে বহদ্দারহাট এলাকায় এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের কাছে কয়েকদফা ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।