শাহ আলম শামীম, কুলাউড়া থেকে :
কুলাউড়া উপজেলায় ভূমি জরিপ কার্যক্রম ১৪ বছর বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে ৩০ ধারার শুনানি। কিন্তু এই ধারায় বিশেষ আপত্তি মামলা করতে না পারায় ভূমি মালিকরা পড়েছেন বিপাকে। পাশাপশি সরকারও বঞ্চিত হচ্ছে বড় অংকের রাজস্ব আয় থেকে।
কুলাউড়া উপজেলায় ২০০০ সালে মাঠ জরিপের কাজ শুরু হয়। ১৪ বছর পর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে মধ্যে ১১টি মৌজায় শুরু হয়েছে ৩০ ধারার কার্যক্রম। সেগুলো হলো বারইগাঁও, কাউকাপন, রাজনগর, পৃথিমপাশা, নর্তন, কর্মধা, বালিয়া, নৈমপুর, কৌলারশি, মৈন্তাম ও দৌলতপুর মৌজা।
সরেজমিন এসব মৌজায় পরিচালিত ৩০ ধারার কার্যক্রম পরিদর্শনে গেলে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, ৩০ ধারা কার্যক্রম চলাকালে বিশেষ আপত্তি মামলা নেয়ার বিধান থাকলেও ভূমি মালিকরা মামলা করতে পারছেন না। মামলা নেয়া হচ্ছে না। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ভূমি মালিকরা।
দৌলতপুর মৌজার কৃষক আব্দুল মান্নান, আব্দুল খালিক জানান, তাদের ক্রয়কৃত জায়গায় মাঠ পর্চায় পুরাতন মালিকের নাম অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছে। এখন ৩০ ধারায় কবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে- তা তারা জানেন না। এখন ৩০ ধারা কার্যক্রম চলাকালে আসেন মামলা দিতে। কিন্তু তাদের মামলা নেয়া হচ্ছে না। একই মৌজার নাজমুল ইসলাম জানান, তিনি কিছু জমি কিরেছেন। ৩০ ধারায় তিনি খারিজ করে নিজের নামে রেকর্ড করতে চান। কিন্তু বিশেষ আপত্তি মামলা করতে না পারায় পড়েছেন বিপাকে। বারইগাঁও মৌজায় ৩০ ধারায় মামলা দিতে আসেন প্রবাসী কুতুব উদ্দিন। মাঠ জরিপ চলাকালে তিনি প্রবাসে ছিলেন। বাড়ীর মাঠ পর্চায় পার্শ্ববর্তী লোকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে যান মাঠ জরিপে অংশগ্রহণকারীরা। প্রবাসে থাকায় তিনি তা সংশোধন করতে পারেননি। এখন এসেছেন ৩০ ধারায় মামলা করতে কিন্তু মামলা না নেয়ায় তিনি কি করবেন তা বুঝতে পারছেন না। এভাবে ৩০ ধারা কার্যক্রম পরিচালিত মৌজার লোকজন স্থানীয়ভাবে মামলা করতে না পেরে ভীড় জামাচ্ছেন কুলাউড়া উপজেলা সদরে অবস্থিত সেটেলমেন্ট অফিসে। ৩০ ধারায় মামলা করতে না পারায় ভুমি মালিকরা জমি ক্রয় বিক্রয় করতে পারছেন না। অর্পিত সম্পত্তি রেকর্ড সংশোধনও করা যাচ্ছে না। এতে সরকারও মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান সেটেলমেন্ট অফিসের সংশ্লিষ্টরা। অবিলম্বে বিশেষ আপত্তি মামলা দ্রুত চালুর দাবি ভূমি মালিকদের।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া সেটেলমেন্ট অফিসের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. নুরুল্লাহ’র সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মচারীরা জানান, ৩০ ধারায় আগের দায়ের করা মামলার শুনানি চলবে। তবে আপাতত নতুন করে আর মামলা না নেয়ার নির্দেশ রয়েছে।