আসন্ন সংসদ নির্বাচন

26

সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরের শেষার্ধে বা জানুয়ারির প্রথমার্ধে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান দল বিএনপি এখনো নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে অনড়। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ সংবিধান মেনেই নির্বাচনে যেতে চায়। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতভেদ থাকলেও প্রস্তুতির ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নসূচির খসড়া শিগগিরই কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে আসছে বছরের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচনের ক্ষণগণনা থেকে শুরু করে ফলাফলের গেজেট করা পর্যন্ত অন্তত ৯০টি কাজ চিহ্নিত করে কর্মপরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে ভোটারতালিকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এবারের নির্বাচনে ভোটারসংখ্যা ১০ কোটি ৪৩ লাখেরও বেশি। সম্পন্ন হয়েছে ভোটকেন্দ্রের খসড়া। ধারণা করা হচ্ছে, এবার ভোটকেন্দ্র হবে ৪০ হাজারেরও বেশি। নির্বাচনের কাজে ব্যবহার্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কেনার কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত, প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, নির্বাচনী ম্যানুয়াল তৈরি, মনোনয়নপত্র মুদ্রণসহ আনুষঙ্গিক কাজ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে শেষ হবে। তফসিল ঘোষণার পর শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপের কাজ। এই ধাপে এসে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। মন্ত্রিপরিষদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা, রিটার্নিং অফিসারের জন্য পরিপত্র জারি, আচরণবিধি প্রতিপালন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ, নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন, নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োগের ব্যবস্থাসহ আরো অনেক কাজ রয়েছে। এই সময়ে এসে ব্যালট পেপার ছাপার কাজ করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। সব মিলিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।
নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ করছে। গত বছরের ৩১ জুলাই থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত আইনি কাঠামো ও প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সুধীসমাজ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, নারী নেতৃত্ব ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। এসব আলোচনা শেষে সিইসি জানিয়েছিলেন, যে আইন রয়েছে, তা যথেষ্ট বিধায় নতুন করে আইন করার প্রয়োজন নেই। আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সামনের এই মাসগুলো নির্বাচন কমিশনকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পাড়ি দিতে হবে। নির্বাচনের সময় দেশে যেকোনো ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে তার কিছু আলামত পাওয়া গেছে। শক্তি প্রয়োগের মতো ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বর্তমান ইসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ছয়টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ইসি সে চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হতে পেরেছে কি না, তা প্রশ্নসাপেক্ষ। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে ইসিকে আগে সবার আস্থা অর্জন করতে হবে।