প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত নির্বাচন চাই না – ওবায়দুল কাদের

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার সবধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ বা বিতর্কিত হোক সেটা সরকারি দল চায় না বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
সোমবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে কৃষক লীগের একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরব আমিরাতে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। ফেয়ার নির্বাচন হওয়ার জন্য যত সহযোগিতা লাগবে তা দিয়ে যাবে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না।’
‘আমরা নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে নির্বাচন করবো। নির্বাচনে কোনো বাড়াবাড়ি হবে না। জনগণ যাতে খুশি তাকে ভোট দেবে। সরকারি দল হিসেবে আমরা জনগণের রায় মাথা পেতে নেব।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা চাই একটা ভালো নির্বাচন হোক। প্রশ্নবিদ্ধ বা বিতর্কিত নির্বাচন করতে চাই না। আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দশনাই দিয়েছেন।’
মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ মেনে নিয়েছে জানিয়ে দলটির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব যদি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন তাহলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কেন পারবেন না এটা হলো আমাদের প্রশ্ন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নটা আমরা করেছি, কোনো গণতান্ত্রিক দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দেশের প্রধানমন্ত্রী অংশ নেন, ক্যাম্পেইন করেন। ভারতের কর্নাটকের বিধানসবা নির্বাচন এবং এমনকি ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছি ক্যাম্পেইনে এসেছেন এবং বক্তব্য রেখেছেন। উন্নত কোনো গণতান্ত্রিক দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মন্ত্রীদের অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই। আমাদের এখানে কেন এটা হলো এই প্রশ্নটা আমরা করেছি। প্রতিবাদ করিনি।’
‘আমরা এটা মেনেও নিয়েছি। আমাদের যুক্তিযুক্ত বিষয়টি আমরা শুরু জানিয়েছি মাত্র। এটা লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড হতে পারে না। বাংলাদেশের জন্য এটা অভিনব একটা কিছু যে মন্ত্রী সাংসদরা অংশ নিতে পারবেন না। এটা হওয়া উচিত নয়।’
কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমাদের যুক্তি খণ্ডন করে বলেছেন, তাদের আচরণবিধিতে যা আছে সেটাই ফলো করার জন্য। আমার সেটা মেনে চলছি। আমাদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আগেও কোনো আপত্তি ছিল না, এখনো নেই। আমরা শুধু যুক্তির প্রশ্নে এই কথাটি উত্থাপন করেছি।’
‘এমনকি ইভিএমের ব্যাপারে আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা করবে ইসি। তারা যে ইলেকশন কন্ডাক্ট করবে সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ থাকবে না। সরকার কোনো ব্যাপারেই তাদেরকে নির্দেশ দেবে না।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা ইভিএমের পক্ষে। আমরা আধুনিক প্রযুক্তিতে বিশ্বাস করি। এজন্য সহজে ভোট প্রদান, ভোট গণনা, আধুনিক পদ্ধতি অনেক সহজ। এটা পরীক্ষিত বিষয়। কাজেই আমরা এটার পক্ষে। যদি ইসি মনে করে ইভিএম সিস্টেম ছাড়া অতীতের মতো করবে এটাও তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়, তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও ভূমিকা থাকবে না। তখন নির্বাচন কমিশনের অধীনেই চলে যাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের দায়িত্ব পালন করবে।’
বিএনপির প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের অভিযোগতো আমাদের প্রার্থীও করেছে যে, নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। তাদের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, কর্মীকে মারধর করা হয়েছে পুরান ঢাকায়।’
‘এটা ইসির দায়িত্ব। কাজেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেয়ার মালিক হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কোনো পক্ষ যদি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তারা অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে পারে। এই ব্যবস্থা যদি আমাদের কারো লঙ্ঘনে নিতে হয় সেই বিষয়টি অবশ্যই আমরা মেনে নেবো।’
স্বরসতী পূজার জন্য নির্বাচন পিছিয়ে নেয়া না নেয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে বলেও অপর এক প্রশ্নের জবাবে জানান ওবায়দুল কাদের।