ভোটার তালিকা প্রকাশের যে আইন রয়েছে, সে অনুযায়ী ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি খসড়া এবং ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট তারিখে এবার ভোটার তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী ১ মার্চ পালিত হবে জাতীয় ভোটার দিবস। সেই দিনেই নতুন ভোটার তালিকা করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এবারের ভোটার হালনাগাদে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহ করছে নির্বাচন কমিশন। ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা এর আগে যাদের জন্ম এ রকম নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবার। এর মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদের নাম ২০২০ সালে প্রকাশিতব্য ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর যাদের বয়স এখনো ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি, তাদের বয়স যখন ১৮ বছর পূর্ণ হবে তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশ স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের আটক করে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে পরিচয় গোপন করে অনেক রোহিঙ্গা সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট। অনেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছে বলে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবেই নতুন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সেদিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখতে হবে। অবশ্য নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, এবারের হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার হিসেবে যাদের নিবন্ধন করা হয়েছে, তাদের তথ্য রোহিঙ্গা ডাটাবেইসের সঙ্গে মেলানো হবে। এর মাধ্যমে আগে কোনো রোহিঙ্গা ভোটার হয়ে থাকলে তাদের বাদ দিয়ে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা করা হবে। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ভুয়া ভোটার। এর আগেও ভোটার তালিকায় ভুয়া ভোটার সংযোজন নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যে জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করে থাকে, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের নাগরিকদের এই গুরুত্বপূর্ণ দলিলটি যাতে নির্ভুল হয় সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।
একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা উপহার দিক নির্বাচন কমিশন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।