কাজিরবাজার ডেস্ক :
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষায় ফেল করা পরীক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ঢাকা বোর্ড থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশের চিঠি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, এসএসসি ও এইচএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বা একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মূল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া যাবে না। এছাড়া নির্বাচনী পরীক্ষার উত্তরপত্র ছয় মাস সংরক্ষরণ করতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের।
বোর্ড সূত্র জানায়, মূলত প্রশ্ন ফাঁস রোধের অংশ হিসেবেই এই আদেশ জারি করা হয়েছে। সাধারণত মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন ফাঁসের পেছনে ছোটে না। যারা দু’তিন বিষয়ে ফেল করে তারাই আগে থেকে প্রশ্নের পেছনে ছোটে। এই আদেশের মাধ্যমে এখন থেকে অনুত্তীর্ণদের আর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকল না।
জানা গেছে, অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বর্তমানে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং ম্যানেজিং কমিটির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর পাবলিক পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, এক-দুই বিষয়ে ফেল করলে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জরিমানা দিলেই নির্বাচনী পরীক্ষায় পাস দেখিয়ে দেয়া হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের একটি চিঠি পাঠায়। দুদকের চিঠিতে নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অনিয়ম রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।
বিষয়টি অধিদফতর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করলে গত ১৬ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড সাব সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠায়। চিঠিতে দুদকের পাঠানো চিঠির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৯০৯ শিক্ষক : বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শূন্যপদে নিয়োগ পাওয়া ৯০৯ শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের এমপিও কমিটি। তারা নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্তির (বেতন-ভাতার সরকারী অংশ) জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। সোমবার অধিদফতরে অনুষ্ঠিত এমপিও কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে উপস্থিত একজন পরিচালক জানান, ৯১৩ শিক্ষককে এমপিও দেয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ আসায় ৯০৯ শিক্ষককে এমপিও দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ৯০৯ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলে ৪৭ জন, চট্টগ্রাম ৪২, কুমিল্লা ৬২, ঢাকা ১৪৩, খুলনা ৮৬, ময়মনসিংহ ১৪২, রাজশাহী ৭৭, রংপুর ২৩৭ জন এবং সিলেট অঞ্চলে ১০ জনকে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া অনলাইনে আবেদন করা ৬৭ জনকে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও এক হাজার ২৫২ জনের এমপিওশীটে নানাবিধ সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অধিদফতরের দুজন পরিচালক, মাদ্রাসা অধিদফতরের একজন পরিচালক, শিক্ষা অধিদফতরের নয় আঞ্চলিক উপ-পরিচালক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তিনজন প্রতিনিধিসহ প্রায় ৩০ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।