প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন শহরের সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এবার বর্ষায় এটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। মূলত সময়জ্ঞান ভুলে বর্ষা মৌসুমে অধিকাংশ সড়কজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি এ অবস্থার জন্য দায়ী। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কোনো ভ্রƒক্ষেপ আছে বলে মনে হয় না! ফলে নিত্যদিন যানজট-জলাবদ্ধতায় নাকাল হচ্ছে নগরবাসী। সাধারণত বর্ষাকে মানুষ স্বস্তির ঋতু মনে করে। বর্ষা মৌসুমে উন্নয়নের নামে খোঁড়াখুঁড়ির এ মহাযজ্ঞ নগরবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়েছে। সড়ক খনন নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ এপ্রিল থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। নীতিমালা কেন মানা হচ্ছে না।
প্রতিবছর জলাবদ্ধতায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়লেও এ থেকে উত্তরণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না। বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাই শুধু ভেঙে পড়ে না, পাশাপাশি রাস্তায় আটকে পড়ে শ্রমজীবী-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। সমন্বয়হীনতা, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব এবং অদূরদর্শী পদক্ষেপের কারণেই জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না, এতে কোনো সন্দেহ নেই। জলাবদ্ধতা সমস্যা আমাদের সামনে যে সত্যটি তুলে ধরেছে তা হল- উন্নয়নের নামে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও এর কোনো সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী।
জলাবদ্ধতা সমস্যা কোনো দৈব-দুর্বিপাক নয়। সামান্য বৃষ্টিতেই নগরীর অধিকাংশ রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির মূলে রয়েছে অসময়ে, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। অপরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হলেও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বরাবরই উদাসীন। উচিত সমন্বিত প্রকল্পের আওতায় নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও তা সার্বক্ষণিকভাবে পরিষ্কার রাখার ওপর জোর দেয়া। একইসঙ্গে আরও একটি কাজ করা জরুরি : নগরীর চারপাশের নদ-খাল-নালা সংস্কার করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা। নয়তো সাংবাৎরিক জলাবদ্ধতার আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা পড়বে নগরবাসী।জলাবদ্ধতা যাতে চলার গতি শ্লথ না করে, সে লক্ষ্যে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে এ সমস্যা স্থায়ীভাবে নিরসনের উদ্যোগ নিতে হবে। যা সকল নাগরিকের প্রত্যাশা।