এডভোকেট শামীম সিদ্দিকীর বাসায় ডাকাতিতে জড়িতরা শনাক্ত

37

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট জেলা বারের আইনজীবী এডভোকেট শামীম সিদ্দিকীর বাসায় জড়িতদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। জড়িতদের একজন এই মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তার জবানবন্দির প্রেক্ষিতে ডাকাতিতে অংশ নেয়া আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, এ দুজনকে গ্রেফতারের পর পরই আত্মগোপণ করেছে তার সহযোগিরা।
এডভোকেট শামীম সিদ্দিকী জানান, গত ৪ অক্টোবর রাতে নগরীর শাহী ঈদগার হোসনাবাদ আবাসিক এলাকাস্থ তার বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এডভোকেট শামীম সিদ্দিকী সস্ত্রীক সে সময় পবিত্র হজ্বব্রত পালনে মক্কায় অবস্থান করছিলেন। বাসায় ছিলেন তার মেয়ে ও এক শিশু পুত্র। রাত  আড়াইটার দিকে সংঘবন্ধ ডাকাত দল বাসার গ্রীল ভেঙ্গে ঢুকে মহিলা ও শিশুদের ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। এরপর ঐ বাসা থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিষপত্র লুট করে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন এডভোকেট শামীম সিদ্দিকীর জামাতা বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
এয়ারপোর্ট থানা সূত্র ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর নূরুল আলম জানান, ঘটনার পর পরই পুলিশ ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার অভিযানে নামে। নিজস্ব সোর্স মারফত তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশ ডাকাতিতে জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে মূল সন্দেহভাজন ইশতিয়াক আহমদ রাজুকে ঘটনার দুদিন পর গ্রেফতার করতে সক্ষম হন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এয়ারপোর্ট থানার ইন্সপেক্টর নুুরুল আলম। গ্রেফতার ইশতিয়াক আহমদ রাজু গোলাগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নগর গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র। পুলিশ আদালতের রিমান্ডের আদালতের আবেদন জানালে আদালত রাজুর রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ রাজুকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রাজু ডাকাতির ঘটনায় জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন এবং এ ঘটনায় জড়িত আরো ৬ জনের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরীর আম্বরখানা লোহারপাড়া এলাকা থেকে বাপ্পী নামের আরো এক যুবককে গ্রেফতার করে। এছাড়া, ডাকাতির ঘটনার পরদিন নগরীর মজুমদারী এলাকা থেকে হাসান ও রাজ নামের দুই যুবককেও ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাসান ও রাজকে নিয়ে রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ দক্ষিণ সুরমা থেকে আলী আসকর ও শাকিল নামের আরো ২ যুবককে গ্রেফতার করে। হাসান, রাজ, আসকর ও শাকিলকেও এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক দেখায় পুলিশ।
এয়ারপোর্ট থানা সূত্রে জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে এক আসামী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় ডাকাতিতে জড়িতদের সম্পর্কে পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার রাজু ও বাপ্পী এই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত মর্মে প্রায় নিশ্চিত পুলিশ। তবে, তারা তাদের যে সব সহযোগীর নাম বলেছে, তারা আত্মগোপণে থানায় পুলিশ এখনো তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি।
গ্রেফতারকৃত অন্যদের সম্পর্কে পুলিশ জানায়, হাসান ও রাজকে যেহেতু ঐ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় ও পরে তাদের নিয়ে অভিযানকালে আসকর ও শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়, তাই তাদেরকে সন্দেহভাজন হিসেবে এই ডাকাতির মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। কিন্তু, এই ৪ জনের কেউ-ই এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি। বর্তমানে পুলিশ রাজু ও বাপ্পীর জবানবন্দিকে সামনে রেখে তাদের তদন্ত অব্যাহত রেখেছে বলে থানাসূত্র জানিয়েছে।