টাইগারদের হারিয়ে সেমিতে ভারত

21

india_win_bg_886739773স্পোর্টস ডেস্ক :
চলতি বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশকে ১০৯ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট করে নিল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। ৩০৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ভারতের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪৫ ওভার থেকে ১৯৩ রান তুলেই শেষ হয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন উমেস যাদব। এছাড়া দুটি করে উইকেট পান মোহাম্মদ সামি এবং রবীন্দ্র জাদেজা।
হাইভোল্টেজ ম্যাচে ভারতের ছুড়ে দেওয়া ৩০৩ রানের টার্গেটে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিং সূচনা করতে আসেন দুই বাহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস।
রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের বাহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল বেশ ভালোভাবেই ভারতীয় বোলারদের খেলছিলেন। প্রতিপক্ষ ভারত বলেই কিনা তামিম কিছুটা মারমুখি হয়ে খেলতে থাকেন। সামির করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তামিম তিনটি চার মারেন।
তবে, ইনিংসের সপ্তম ওভারে উমেস যাদবের বলে উইকেটের পিছনে ধোনির গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন তামিম। আউট হওয়ার আগে তিনি ২৫ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ২৫ রান করেন। একই ওভারে রানআউটের ফাঁদে পড়েন ইমরুল কায়েস (৫ রান)।
ভারতীয় বোলারদের বেশ সহজে মোকাবেলা করেও দুর্ভাগ্যবশত আউট হয়ে ফেরেন গত দুই ম্যাচের টানা সেঞ্চুরিয়ার মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। বাউন্ডারি সীমানা ঘেঁষে রিয়াদের ক্যাচটি লুফে নেন শিখর ধাওয়ান। সৌম্যর সঙ্গে ৪০ রানের জুটি গড়ে ফেরেন রিয়াদ। আউট হওয়ার আগে রিয়াদ ৩১ বলে ২১ রান করেন।
তামিম, ইমরুল আর মাহামুদুল্লাহর পথে ফেরেন বাহাতি ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার। সামির বলে উইকেটের পিছনে ধোনির তালুবন্দি হয়ে ফেরেন সৌম্য। আউট হওয়ার আগে ৪৩ বলে তিনটি চার আর একটি ছয়ে ২৯ রান করেন সৌম্য।
দলীয় ৯০ রানের মাথায় টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারানো টাইগারদের ব্যাটিং হাল ধরার চেষ্টা করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ১৪ রান যোগ করেই বিদায় নেন সাকিব। উইকেটে সেট হয়েও ৩৪ বলে মাত্র ১০ রান করে রবীন্দ্র জাদেজার বলে সামির তালুবন্দি হন সাকিব।
টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারানো বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিং ক্রিজে মুশফিকুর রহিম এবং সাব্বির রহমান মিলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন। যাদবের করা ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুশফিক। আউট হওয়ার আগে ডানহাতি এ ব্যাটসম্যানের থেকে আসে ২৭ রান। মুশফিকের ৪৩ বলের ইনিংসে কোনো ছয় না থাকলেও ছিল দুটি চার।
বাংলাদেশের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফিরলেন নাসির হোসেন। রবীন্দ্র জাদেজার করা ৪৩তম ওভারের শেষ বলে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩৪ বলে ছয়টি চারে ৩৫ রান করা নাসির। এরপর মাশরাফি বিন মর্তুজাও আউট হলে আট উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের। এরপর রুবেল হোসেন এবং সাব্বির দ্রুত আউট হলে ১৯৩ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। সাব্বির শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে করেন ৪০ বলে ৩০ রান।
পাওয়ার প্লে’র দশ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেট হারিয়ে ৪৪ রান। ২০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান। আর ৩০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৮ রান। ৪০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান।
এর আগে ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মার ব্যাটে ভর করে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩০২ রান করে। সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে হলে টাইগারদের ৩০৩ রান করতে হবে।
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া ভারতের হয়ে শতক হাঁকান রোহিত শর্মা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সপ্তম শতক হাঁকিয়ে ১২৬ বলে ১৪টি চার আর ৩টি ছয়ে রোহিত তার ১৩৭ রানের ইনিংসটি সাজান। এছাড়া ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৫ রান করেন সুরেশ রায়না। দলীয় ১১৫ রানে টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান ফিরে গেলে এ দু’জন মিলে ১২২ রানের জুটি গড়েন।
টাইগারদের হয়ে ১০ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ।