এবার ‘সাইকেল’ বোমা

57

1_126972কাজিরবাজার ডেস্ক :
রবিবারও ঢাকায় র‌্যাব অভিযান চালিয়ে বোমা, বিস্ফোরক ও বোমার সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে অভিনব কায়দায় তৈরি ‘সাইকেল বোমা’।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে র‌্যাব-২ অভিযান চালিয়ে অভিনব কায়দায় লুকানো বিস্ফোরকভর্তি বাইসাইকেল, ৫৮টি ককটেল, একটি পাইপবোমা, ৪৮টি পেট্রোলবোমা, ৫০০ গ্রাম সালফার পাউডার এবং নাশকতার কাজে ব্যবহৃত অনান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।
র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্ণেল জিয়াউল আহসান বলেন, র‌্যাবসহ সব বাহিনীই এখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি তৎপর। সে কারণেই নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনা অধিকাংশই নস্যাৎ করে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশেষ করে সন্ত্রাস দমনে র‌্যাবের তৎপরতা সব সময় জোরালো থাকে। বর্তমানে সেটি আরও বাড়ানো হয়েছে।
সাইকেলবোমা ও বিস্ফোরকসহ আটক ৩ : র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান রবিবার বিকালে র‌্যাব-২ ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রোববার ভোরে রাজধানীর কাকরাইল ও সূত্রাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘বিপুল পরিমাণ’ বিস্ফোরক, হাতবোমা, গানপাউডার, পেট্রলবোমাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ সময় আটক করা হয়েছে রাকীবুল ইসলাম মন্ডল ওরফে রাকীব ওরফে শশী, আমিনুল ইসলাম রানা ও রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ নামে ছাত্রদলের তিন নেতাকর্মীকে। ওই সময় তাদের কাছ থেকে অভিনব কায়দায় লুকানো বিস্ফোরক ভর্তি বাইসাইকেল, ৫৮টি ককটেল, একটি পাইপবোমা, ৪৮টি পেট্রলবোমা, ৫০০ গ্রাম সালফার পাউডার এবং নাশকতার কাজে ব্যবহৃত অনান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
কমান্ডার মাহমুদ খান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা র‌্যাবকে জানিয়েছেন, চলমান অবরোধ এবং হরতালে তারা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক (সাবেক কমিটি) আনিসুর রহমান খোকনের নির্দেশে রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা, মতিঝিল, কারওয়ানবাজার এবং ধানমন্ডি এলাকায় বিভিন্ন সময় ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাংচুরের মাধ্যমে নাশকতা চালিয়ে আসছিলেন। নাশকতার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খোকন তার আস্থাভাজন ছাত্রদল নেতা রানা এবং রিয়াজকে জনবল সরবরাহের নির্দেশ দেন। খোকনের নির্দেশে রানা এবং রিয়াজ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সময় তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের খোকনের কাছে নিয়ে যেতেন। খোকন তার নিজ গাড়িতে হাতবোমা ও বিস্ফোরক বহন করে ভাড়া করা ছাত্রদল ক্যাডারদের কাছে সরবরাহ করতেন। এর পর খোকনের নির্দেশিত স্থানগুলোয় হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হতো। এভাবে রানা এবং রিয়াজের সরাসরি অংশগ্রহণ এবং তত্ত্বাবধানে ভাড়া করা ছাত্রদল ক্যাডাররা গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের পাশের রাস্তায় চারটি, গুলশান-১ মোড় এলাকায় তিনটি, ধানমন্ডি মেট্রো শপিং মলের কাছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পাশে চার থেকে পাঁচটি, কারওয়ানবাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীত সাউথইস্ট ব্যাংকের পাশে পাঁচ থেকে ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
সর্বশেষ তারা রাজধানীতে বড় ধরনের নাশকতা চালিয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ছাত্রদল নেতা খোকনের নির্দেশে এবং আর্থিক সহায়তায় গ্রেফতারকৃত রানা খুলনা থেকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য সংগ্রহ করে। তারা একটি বাইসাইকেল সংগ্রহ করে ওই সাইকেল খুলে পাইপের ভেতর ওই বিস্ফোরক দ্রব্য ঢুকিয়ে ফের বাইসাইকেল তৈরি করে। পাইপের ভেতরে বিস্ফোরক দ্রব্য এমনভাবে সেট করা ছিল, যাতে এর ফিউজে আগুন দেয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই প্রচন্ড মাত্রায় বিস্ফোরণ ঘটত। রানা অভিনব পন্থায় পাইপের ভেতরে করে বিস্ফোরক দ্রব্যভরা বাইসাইকেলটি কুরিয়ার সার্ভিসে রাকীবের ঠিকানায় ঢাকায় পাঠায়। কিন্তু এত পন্থা অবলম্বন করেও তারা র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি এড়াতে ব্যর্থ হয়।