কুলাউড়ায় কনষ্টেবল পেটানোর ঘটনায় ১৫ দিনেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়নি

25

কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
কুলাউড়ায় কর্তব্যরত পুলিশ কনষ্টেবল শরাফত আলী (৪৫) কে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন ১৫ দিনেও জমা দেননি তদন্ত কর্মকর্তা। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আহত কনস্টেবলকে বাধ্যতামূলক ১৫ দিনের ছুটিতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ওসি নিজেকে বাঁচাতে অর্থ দিয়ে তদন্তের প্রতিবেদন নিজের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কুলাউড়া রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি ঘটনার পর রেলওয়ের চট্টগ্রাম (এসআরপি) নজরুল ইসলাম ঘটনাটি তদন্ত করতে রেল পুলিশের (আখাউড়া সার্কেল) ইন্সপেক্টর নাছিরুল ইসলামকে নির্দেশ দেন। পরদিন ২৯ জানুয়ারী তিনি সরেজমিনে কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন ৭ দিনের মধ্যে জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তদন্তকারী ওই পুলিশ কর্মকর্তা অভিযুক্ত ওসি জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তার পক্ষে রিপোর্ট জমা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৫ দিন হতে চললেও এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেননি তিনি। এদিকে এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় রেলওয়ে থানা পুলিশের একাধিক পুলিশ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নির্যাতনের শিকার কনস্টেবল শরাফত আলীর ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন,ঘটনাকে ধামাচাপা দিতেই্ তাকে ১৫ দিনের ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে শেরপুরে নিজ বাড়িতে আছেন। তিনি আরও বলেন, দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হলাম বলে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। এতো বড় ঘটনার পরও তদন্ত কর্মকর্তারা কোনো সঠিক রিপোর্ট না দেয়ায় এবং চাকরি চলে যাচ্ছে এমন খবরও শুনে মানষিক চাপে ভুগছি। তিনি বলেন, ‘আমি সবকিছু বলতেছি, কিন্তু পত্রিকায় আমার এমন মন্তব্য ওসি স্যার দেখলে সমস্যা হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চান তিনি।
এদিকে নির্যাতিত পুলিশ কনষ্টেবলকে মারধরের সত্য ঘটনাটি সাংবাদিকদের বলে দেয়ার কারণে জিআরপি থানার পুলিশ কনষ্টেবল মো. আবুল হোসেনকে সাম্প্রতি ময়মনসিংহ জেলায় বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তদন্ত কারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর নাছিরুল ইসলাম মুঠোফোনে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং প্রতিবেদন জমা না দেয়ার বিষয়টি এড়িয়ে বলেন ‘সাংবাদিক ভাই এখন আমি জরুরী কাজে ব্যস্ত আছি পরে ফোন দিবেন।’ এ বলে লাইন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া রেলওয়ে থানার (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে বলেন, ‘একটা ঘটনা হয়েছে, এ বিষয়টা নিয়ে এতো লেখালেখি করে কোনো লাভ হবে না।’
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে কুলাউড়া রেলওয়ে প্লাটফরমে কাউন্টারের সামনে দায়িত্বরত অবস্থায় রেলওয়ে পুলিশ কনষ্টেবল শরাফত আলীকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন ওসি জাহাঙ্গীর আলম। এ সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়।