অনড় খালেদা জিয়া, আসছে সমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচি

23

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকার বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে লাগাতার অবরোধ বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট আর কতদিন চালিয়ে যেতে পারবে তা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও, খালেদা জিয়া অনড়৷ তাই অবরোধের সঙ্গে হরতাল এবং গণমিছিলের কর্মসূচি নিতে চলেছে দলটি৷
অবরোধের ২৪তম দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, ঢাকা মহানগরীসহ ন’টি জেলায় ২৪ ঘণ্টার হরতাল চলছে৷ এর আগেও অবরোধের মধ্যেই টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করেছে বিএনপি জোট৷ এর সঙ্গে অবরোধ অব্যাহত রেখে সহসাই গণমিছিল বা গণসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে বিএনপি৷ বিএনপি নেতারা মনে করছেন, টানা অবরোধ চালিয়ে যেতে হরতাল, গণমিছিল বা গণসমাবেশের মতো কর্মসূচি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে৷ এর কারণ, রাজধানী ঢাকা এর মধ্যেই অবরোধের চরিত্র হারিয়েছে৷ দেশের অন্যান্য স্থানেও অবরোধ চলছে ঢিলেঢালাভাবে৷ তাই অবরোধের মধ্যেই বিকল্প কর্মসূচি দিয়ে অবরোধকে চাঙ্গা রাখার কৌশল অবলম্বন করার চিন্তা-ভাবনা করছে বিএনপি নেতারা৷
তারা মনে করছেন, সরকারের কঠোর মনোভাব এবং নতুন করে ক্রসফায়ার বেড়ে যাওয়া অবরোধে সক্রিয় নেতা-কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে৷ এছাড়া পেট্রোলবোমাসহ বাস পোড়ানো ও নাশকতা সরকারবিরোধী আন্দোলনকে সমালোচনার মুখে ঠেলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত৷ তাই জনসম্পৃক্তা বাড়িয়ে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই৷ বিশেষ করে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর জানাযায় বিপুল সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ তাদের উৎসাহিত করেছে৷ তাই তারা মনে করছেন, অবরোধ অব্যাহত রেখে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দিলে তাতে লোক সমাগম হবে৷
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এডভোকেট আহমেদ আযম খান আন্দোলনের সার্বিক বিষয় নিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা নিশ্চিত যে আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতিতে যাওয়ার আগে অবরোধ প্রত্যাহার হচ্ছে না৷ আর অবরোধের মধ্যেই জেলায় জেলায় হরতাল বা সারাদেশে হরতাল ডাকা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা কৌশল৷”
তিনি বলেন, ‘‘ম্যাডাম খালেদা জিয়া এই আন্দোলন নিয়ে লন্ডনে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেন৷ কারণ তিনি দলের দ্বিতীয় ব্যক্তি৷ এছাড়া কর্মসূচি গোপন রেখে সময়মত ঘোষণা করাও একটি কৌশল৷” তিনি বলেন, ‘‘খালেদা জিয়া কর্মসূচি নিয়ে দলের নির্ভরযোগ্য সিনিয়র নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন৷ তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়াই নেন৷”
আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘টানা অবরোধ চালিয়ে নিতে গণমিছিল বা গণসমাবেশ ছাড়াও আরো নতুন কর্মসূচি আসতে পারে৷ তবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি৷ আর তা চূড়ান্ত হলেও আগেভাগে জানার কোনো সুযোগ নেই৷ তবে সময় মতোই জানানো হবে৷”
তিনি দাবি করেন, ‘‘এই আন্দোলনের সঙ্গে জনগণ আছে৷ তার বড় প্রমাণ আরাফাত রহমান কোকোর ঢাকার জানাযায় বিপুল মানুষের উপস্থিতি৷ তাই আন্দোলনের কৌশল হচ্ছে অবরোধ অব্যাহত রেখে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার কর্মসূচি ঘোষণা করা৷”
তিনি বলেন, ‘‘কর্মসূচি ঘোষণায় দলের মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই, তবে গোপনীয়তা আছে৷ পরিস্থিতির কারণেই এ কৌশল নিতে হচ্ছে বিএনপিকে৷”
আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি বলতে কী মনে করছেন জানতে চাইলে আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘অবশ্যই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন ঘোষণা৷”