চেয়ারম্যানের উপর ক্ষোভ প্রকাশে বিরল দৃষ্টান্ত !

31

juri pic (road maitainance-2কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের মানুষ চেয়ারম্যানের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে স্থাপন করলেন বিরল দৃষ্টান্ত। দুই গ্রামের লোকজনের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল তেতইরতল-চিরাইরদাঁড়া একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি সংস্কারের। সম্প্রতি কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় ওই রাস্তার একাংশে সংস্কারকাজ হয়। দায়সারা কাজ হওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটির সংস্কারকাজে নেমে পড়েন।
স্থানীয় লোকজন জানান, জুড়ী-কুলাউড়া সড়কের তেতইরতল থেকে চিরাইরদাঁড়া কাঁচা রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। গোবিন্দপুর ও পশ্চিম গোবিন্দপুর গ্রামের লোকজন এ রাস্তা দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। দুই গ্রামের লোকসংখ্যা প্রায় এক হাজার। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে পার্শ্ববর্তী হাকালুকি হাওরের জমি থেকে আশপাশের জায়ফরনগর, হামিদপুর, ভোগতেরা, চাটেরা, হামিদপুর ও কালিনগর গ্রামের লোকজন বোরো ধান আনতে এ রাস্তা ব্যবহার করেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি ২০১৪-’১৫ অর্থবছরের তেতইরতল-চিরাইরদাঁড়া রাস্তার ৩৫০ মিটার জায়গায় সংস্কারকাজের জন্য কাবিখার আওতায় ১০ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য (চাল) বরাদ্দ দেয়া হয়।
সরেজমিনে এলাকায় গেলে দেখা যায় গোবিন্দপুর ও পশ্চিম গোবিন্দপুরের বিভিন্ন বয়সী শতাধিক লোক রাস্তার সংস্কারকাজ করছেন। তাঁদের কেউ কেউ দুই পাশের নিচু জমি থেকে কোদাল দিয়ে মাটি কেটে টুকরিতে ভরে রাস্তার ওপর ফেলছেন। কেউ কেউ সেই মাটি কোদাল দিয়ে টেনে সমান করে দিচ্ছেন।
গোবিন্দপুর গ্রামের জয়নাল মিয়া, হেলাল মিয়া, কামরুল ইসলাম, পশ্চিম গোবিন্দপুরের সর্বেশ বিশ্বাসসহ আরও কয়েকজন ক্ষোভের সঙ্গে জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে হাকালুকি হাওরে পানি বেড়ে রাস্তাটি তলিয়ে যায়। তখন কাদাজলে ভিজে চলাচল করতে হয়। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা বেশি দুর্ভোগে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানোর পর ডিসেম্বর মাসে ছয়-সাত দিন রাস্তায় কাজ হয়। এ সময় শ্রমিকেরা দায়সারা কাজ করেন। মাটি ফেলে রাস্তাটি পর্যাপ্ত উঁচু করা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি দুই গ্রামের পঞ্চায়েতের লোকজন বৈঠক করে স্বেচ্ছাশ্রমে পুরো রাস্তাটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেন।
রাস্তার সংস্কার কাজের প্রকল্প কমিটির সভাপতি জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল খালিক জানান, দুই কিস্তিতে পাওয়া পাঁচ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য দিয়ে রাস্তাটির প্রায় ৮০০ ফুট (প্রায় ২৫০ মিটার) জায়গায় মাটি ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। এতে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। বাকি পাঁচ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য পিআইও কার্যালয় থেকে ছাড়  হলে অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে দেয়া হবে।
উপজেলার পিআইও মো. শিমুল আলী জানান, দাপ্তরিক ব্যস্ততার কারণে তেতইরতল-চিরাইরদাঁড়া রাস্তার সংস্কার কাজ তাঁর দেখা হয়নি। কাজে অনিয়ম পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।