নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইন শৃংখলাবাহিনীর সাথে মতবিনিময়কালে ইসি মাহবুব তালুকদার ॥ দায়িত্ব পালনকারীদের পক্ষপাতমূলক আচরণ আশা করি না

53
সিলেটে নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইন শৃংখলাবাহিনীর সাথে মতবিনিময়কালে বক্তব্য রাখছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ছবি- রেজা রুবেল

স্টাফ রিপোর্টার :
নির্বাচন আর সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। নির্বাচন অর্থ হচ্ছে সহিংসতামুক্ত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। ভোটার যাতে নিরাপদে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। গতকাল রবিবার সকালে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে সিলেট বিভাগে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে মতবিনিময় সভা তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই সিলেট বিভাগে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ এবং গ্রহনযোগ্য নির্বাচন। যে কোন মূল্যে নির্বাচনে ভীতিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একজন ভোটার যেন নির্বিঘেœ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজ ইচ্ছামত ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ী ফিরতে পারে এর বেশি কিছু চাওয়ার নেই।
সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজ সোমবার থেকে দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন। সেনাবাহিনী আমাদের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক। আমি মনে করি অতীতের সংসদ নির্বাচন গুলোতে সেনা মোতায়েন এর মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সর্বোত্তম ব্যবহার আবশ্যক। এবারের জাতীয় নির্বাচন সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ সমগ্র জাতীর আস্থার সংকট মোচন করেছে।
নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনার বলেন, একটা কথা স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই, নির্বাচনী দায়িত্ব যারা পালন করবেন তাদের কাছে পক্ষপাত মূলক আচরণ কখনো আশাকরি না। আমরা কোন ব্যক্তি গোষ্ঠী বা দলের প্রতি অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে দায়িত্ব পালন করতে আসিনি। সকল প্রার্থী আমাদের কাছে এক ও অভিন্ন। তাদের প্রতি আচরণে আপনাদের ভূমিকা হবে বিচারকের মত নির্মম। তাই কঠোরভাবে নিরপেক্ষতার মধ্য দিয়ে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশা রাখি। এ সময় নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে প্রশাসনিক ও আইনশৃংখলাবাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে অতিগুরুত্বপূর্ণ পবিত্র আসনে যারা বসবেন, তারা ভোটারদের ভোটের মাধ্যমে আসবেন এটাই হবে প্রত্যাশা। পেশীশক্তি বা কালোটাকার মাধ্যমে কেউ যেন সেই আসনে বসতে না পারে। আমাদের স্বাধীনতার পূর্বশর্ত যদি হয়ে থাকে গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের পূর্ব শর্ত হয়ে থাকে নির্বাচন তাহলে এই নির্বাচনকে অবশ্যই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হতে হবে।
ডিসেম্বর বিজয়ের মাস উল্লেখ করে তিনি বলে, এটা বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহিদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শর্ত নিয়ে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমরা করতে পারবো না তা কখনো হতে পারে না। আমাদের দেশ ছোট হতে পারে, কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা অনেক বড়। তাই আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখার এই নির্বাচনে আমরা অবশ্যই সফল হবো। আসুন আমরা সবাই মিলে একটি শুদ্ধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের ঋণ শোধ করি।
এতে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও ৪ জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।