নগরীতে ছাত্রদল-শিবির ও পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে আহত ২০

60

DSC_6100স্টাফ রিপোর্টার :
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা ও ৫ জানুয়ারী সমাবেশের প্রতিবাদে নগরীর মদিনা মার্কেটে পুলিশের সাথে শিবির কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল সোমবার বাদ যোহর শিবির নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। শিবির নেতাকর্মীরা এ সময় অন্তত ১২টি গাড়ি ভাঙচুর করেন। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদল-শিবির নেতাকর্মীরা ব্যাপক গাড়ী ভাংচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সূত্রে জানা গেছে, জোহরের নামাজের পর মদিনা মার্কেটের লতিফ মঞ্জিল এলাকা থেকে শিবির নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি মদিনা মার্কেট পয়েন্টের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়। শিবির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পাল্টা জবাবে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় শিবির নেতাকর্মীরা একটি ট্রাক, একটি পিকআপ ভ্যান ও অন্তত ১০টি সিএনজি অটোরিক্সা ভাঙচুর করেন।
গতকাল সোমবার দুপুর আড়াই টার দিকে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের মোমিনখলা এলাকায় রাস্তায় টাওয়ার জ্বালিয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীর বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহি গাড়ী ভাংচুর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তার সটকে পড়ে। এদিকে গত রবিবার রাত সাড়ে ৮ টায় বঙ্গবীর রোডের লাউয়াই পিরোজপুর রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর এবং রাস্তায় টাওয়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদল। এ সময় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা লাউয়াই সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি থামিয়ে ৩টি সিএনজি অটোরিক্সা ভাঙচুর টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। টহল পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত সটকে পড়ে ছাত্রদল। পরে পুলিশ টায়ারের আগুন নেভায়।
ভার্থখলা ভূঁইয়ার পাম্প স্ট্যান্ডের চেয়ারম্যান খসরু আহমদ বলেন, একটি অটোরিক্সা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় রাস্তায় ককটেল ফাটিয়ে তান্ডব চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা।Untitled-1878777 copy
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, ছাত্রদল রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়েছিল। পুলিশ দেখে পালিয়ে গেছে।
এদিকে, গত রবিবার বিকেলে নগরীর জিন্দাবাজার এলাকা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। তখন ওই এলাকায় আংতক সৃষ্টি হয়। এ সময় ছাত্রদল-পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। ছাত্রদল মিছিল নিয়ে এলে পুলিশ গুলি চালায়। চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পুলিশ ১৩ জন ছাত্রদল কর্মীকে আটক করে। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করার প্রতিবাদে বের হওয়া প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে এ সংঘর্ষ বাঁধে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়। জিন্দাবাজার কাজী ইলিয়াস আবাসিক এলাকার গলির মুখ থেকে সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাঈদ আহমদ ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদের নেতৃত্বে মিছিল বের করে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। মিছিলটি জিন্দাবাজার পয়েন্টে আসলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশী বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি সামনের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ মিছিল থেকে ছাত্রদল নেতা জি এম আজমকে আটক করে। এ সময় ছত্রভঙ্গ হয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা পুলিশ কে লক্ষ্য করে  ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশের সাথে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের প্রায় আধঘন্টা ধরে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় পুলিশ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর গুলি ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। পরে পুলিশ তাদের জনবল বাড়িয়ে দিলে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা পিছু হটেন। ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে পুলিশ সংঘর্ষের সময় পুলিশ ১৩ জনকে আটক করেছে বলে  জানা যায়। এ সময় ১০ জন আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী এক ছাত্রদল নেতা জানান।
এছাড়া গতকাল সোমবার বিকেলে ও সন্ধ্যায় কুমপাড়া সহ নগরীর বেশ কয়েকটি স্থানে ছাত্রদল-শিবির কর্মীরা তান্ডব চালায় এবং পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে। এসব ঘটনায় নগরীতে লোকজনের মধ্যে আতংক ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
shahin--05-01-15--08