গোয়াইনঘাটে অবৈধ ক্রাশার মেশিন অপসারণ অভিযানে হামলা, ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ সহ আহত ২০

37

Untitled-1111গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে গড়ে উঠা ষ্টোন ক্রাশার মেশিন অপসারণে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান চলাকালিন সময়ে রাস্তার দুই পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠা অর্ধশতাধিক ক্রাশার মেশিন অপসারণ করা হয়েছে। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা এস এম ফেরদৌস ইসলামের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা, পুলিশ ও বিজিবি’র অর্ধশতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ক্রাশার মেশিন অপসারণ করার সময় স্থানীয় মিল মালিক ও শ্রমিকেরা অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যদের উপড় হামলা চালায়।
এ সময় ইউএনও এবং বিজিবি’র ব্যবহৃত দুটি গাড়ি ও পুলিশের একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে হামলাকারীরা। হামলায় উপজেলা ভূমি সহকারি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট, পুলিশ সদস্য এবং সাংবাদিক সহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল শনিবার সকালে জাফলং এলাকায় পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে গড়ে উঠা ষ্টোন ক্রাশার মেশিন অপসারণের জন্য উপজেলা সহকারি ভূমি কর্মকর্তা এস এম ফেরদৌস ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনাকারী দল উপজেলার নলজুরী ও গুচ্ছগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক ক্রাশার মেশিন অপসারণ করেন। এক পর্যায়ে অপসারণ করার অভিযান অব্যাহত থাকলে স্থানীয় মিল মালিক, শ্রমিক ও জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যদের উপর হামলা চালায়। হামলায় অভিযানের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি ভূমি কর্মকর্তা এস এম ফেরদৌস ইসলাম, থানার এ এস আই বিনয় চক্রবর্তী, মাই টিভির গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি হুমায়ুন আহমেদসহ অন্তত ২০জন আহত হন। এ সময় গোয়াইনঘাটের ইউএনও ও বিজিবি’র ব্যবহৃত দুটি গাড়ি এবং পুলিশের একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে উত্তেজিত জনতা। জনতার রোষানল থেকে প্রাণ বাঁচাতে অভিযান পরিচালনাকারী দলের ৩জন সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ি চালক মেহেদী দৌড়ে ভারত সীমান্তের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা তাদের আটক করেন। এক পর্যায়ে বিজিবি’র সদস্যরা ভারতীয় বিএসএফ’র সাথে কথা বলে ২ ঘণ্টা পর আটককৃতদের ফেরত আনতে সক্ষম হয়। অপরদিকে ক্রাশার মেশিন অপসারণের প্রতিবাদে স্থানীয় জনতা সিলেট তামাবিল মহা সড়কের মামার বাজার পয়েন্ট ও গুচ্ছগ্রাম এলাকায় প্রায় ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও জাফলং ক্রাশার মিল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলু বখত ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের সাথে আলোচনা করলে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। এদিকে বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহি উদ্দিন খান আলমগীর ও গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম জানান, জাফলংয়ে পরিবেশের ছাড়পত্র বিহীন অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা প্রায় অর্ধশতাধিক পাথর ভাঙ্গার ক্রাশার মেশিন অপসারণ করা হয়েছে। ইতিপূর্বে অবৈধভাবে স্থাপিত ক্রাশার মেশিন নিজ নিজ উদ্যোগে অপসারণের জন্য স্থানীয় ক্রাশার মিল মালিকদের সাথে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা একাধিকবার বৈঠক করেছেন। তাতেও কোন সুরাহা না হওয়ায় এই অপসারণ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অপসারণ চলাকালীন সময়ে সুবিধাভোগী একটি মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যদের  উপর হামলা চালায় এবং দুটি গাড়ি ও একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। তিনি আরো বলেন বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা ক্রাশার মেশিন নিজ উদ্যোগে সরিয়ে না নিলে অবৈধ ক্রাশার মেশিন অপসারণে আরো কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে।2014-12-13 13.16.35 (FILEminimizer)
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হাই বলেন ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যদের উপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।