উন্নত শিক্ষা দান ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে

5

 

গত শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল। ইতোমধ্যে কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। খবরে প্রকাশ, শিক্ষা বোর্ডগুলো আগামী ১০ আগস্ট থেকে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তি আবেদন শুরুর কথা ভাবছে। তবে দেশজুড়ে এত কলেজ ও আসন থাকার পরও প্রতি বছর নামিদামি কলেজেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সংকট দেখা যায়। প্রতিবারের মতো এবারও জিপিএ-৫সহ ভালো ও মধ্যম মানের ফল করা শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা কিছু প্রতিষ্ঠানে তুমুল ভর্তিযুদ্ধ শুরু হবে। আসন সংখ্যা সীমিত এবং ভর্তি পদ্ধতি ও পরীক্ষার ক্রটির কারণে অনেক শিক্ষার্থী তার কাক্সিক্ষত কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। এখন শিক্ষার্থীদের চিন্তা একাদশ শ্রেণিতে ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে। যদিও সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ভর্তিযোগ্য প্রতিষ্ঠানে আসন আছে ২৫ লাখের মতো। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র কয়েকশ। এ তথ্য থেকে দেশে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দক্ষ শিক্ষকের সংখ্যার বিষয়ে একটি ধারণা পাওয়া যায়।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অন্তত ৮ লাখ আসন শূন্য থাকবে। সব অভিভাবকই চান, তাদের সন্তান কাক্সিক্ষত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হোক। কিন্তু এটা অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে এ সময়ে সন্তানদের ভর্তি নিয়ে দারুণভাবে উদ্বিগ্ন থাকতে হচ্ছে অভিভাবকদের। থাকারই তো কথা। প্রত্যেকেই তো চান, তার সন্তান সবচেয়ে ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হোক। দেখা যায়, ভালো কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য হাজার হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই নানা কারণে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। মেধাবী তথা দরিদ্র শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করলেও অনেক সময় অর্থের অভাবে ভর্তি বাণিজ্যের কারণে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। শুধু তাই নয়, অনেক সময় রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, স্বজনপ্রীতি, কোটা পদ্ধতি ইত্যাদি থাকার কারণেও অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ হারায়। জিপিএ-৫সহ ভালো ও মধ্যম মানের ফল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা এবার অনেক বেশি। ফলে পছন্দের শীর্ষে থাকা কিছু প্রতিষ্ঠানে তুমুল ভর্তি যুদ্ধ হবে। এর বিপরীতে অখ্যাত, নাম সর্বস্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী সংকটে পড়বে। উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। কিন্তু আমাদের সস্তানদের শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারিনি। আমরা মনে করি, উন্নত ও মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে শিক্ষার মান বাড়াতে হবে, উন্নত শিক্ষা দান ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদের জন্য পেশার মান উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা যদি আমাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে চাই, তাহলে শিক্ষার সর্বস্তরে মান উন্নয়নের পদক্ষেপ নিতে হবে।