খুলিয়াটুলায় শয়নকক্ষ থেকে কলেজ ছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার

25

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর শেখঘাট খুলিয়াটুলার নীলিমা আবাসিক এলাকার ১৪ নম্বর বাসা থেকে সোনিয়া আক্তার (২৪) নামে এক কলেজ ছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুরে ৪র্থ তলার শয়নকক্ষ থেকে এই গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। সোনিয়া জকিগঞ্জ উপজেলার কলাছড়া বহরম গ্রামের বেলাল মিয়ার কন্যা। তিনি খুলিয়াটুলা নিলিমা আবাসিক এলাকার ৪র্থ তলার মা ও সৎ বাবার সঙ্গে থাকতেন। সোনিয়া দক্ষিণ সুরমা সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পরিবারিক সূত্র জানা যায়, গতকাল রবিবার সকালে হঠাৎ করে সোনিয়ার সৎ পিতা ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও গ্রামের সেলিম মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যান পরিবারের সদস্যরা। তখন ঘরে শুধু সোনিয়া ও তার ভাবি ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে সোনিয়ার সাড়াশব্দ না পেয়ে তার ভাবি সোনিয়ার কক্ষে গিয়ে বিছানার উপরে গলাকাটা অবস্থায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় হাসপাতালে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের খবর দেন সোনিয়ার ভাবি। তারা বাসায় ফিরে পুলিশে খবর দিলে গতকাল দুপুর পৌনে ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। উদ্ধার হওয়া লাশের পাশ থেকে এসময় পুলিশ কাপড় কাটার একটি কাঁচি জব্দ করেছে। এর আগে সিলেট সিআইডি’র একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছে সেখান থেকে খুনের বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করে।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় সোনিয়ার মা উর্মিলা হাউমাই করে কাঁদছেন। পরে পরিবারের অন্য সদস্য বলেন, সোনিয়ার মামাতো ভাই আজমিরীগঞ্জের সজিব তাদের বাসায় থাকতেন। তিনি ঢাকায় ভাংগাড়ীর ব্যবসায়ী। সজিবের বর্তমান বাসা আখালিয়া এলাকায়। সেখানে তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। ঘটনার ৪/৫ দিন পূর্ব থেকে সজিব সোনিয়াদের বাসায় থাকতেন। সোনিয়া যে রুমে ঘুমাতেন সজিব সে রুমের ফ্লোরের মেঝেতে ঘুমাতেন। গতকালও ছিলেন সজিব। সোনিয়ার কাছে জায়গা ক্রয় করার জন্য ৪ লক্ষ টাকা ও ৩ ভরি স্বর্ণ ছিলো। ঘটনার পর থেকে পরিবার সে টাকা ও স্বর্ণালংকার খুঁজে পাচ্ছে না। তারা ধারণা করছেন- সজিবই সোনিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে সোনিয়ার কাছে রক্ষিত ৪ লক্ষ টাকা ও ৩ ভরি স্বর্ণ নিয়ে বাইরে দিকে দরজা বন্ধ করে সবার অজান্তে পালিয়ে গেছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ লাশ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিস্তারিত পরে জানাতে পারবো।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখ পিপিএম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকান্ড। নিহতের গলায় গভীর কাটা রয়েছে। সুরতহাল শেষে লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন- এ ঘটনায় একজনকে আমরা সন্দেহ করছি। তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করছি না। তাকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।