জেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের শোকজপত্রে ওসমানীনগরে আলোচনা-সমালোচনা!

13

ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত ওসমানীনগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক কমিটির সদস্যকে কারণ দর্শনোর নোটিশকে ঘিরে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনে নানা আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টির হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে বিএনপির মতো একটি বড় দলের জেলার দায়িত্বশীলরা দলীয় নিয়ম শৃঙ্খলার বাহিরে গিয়ে প্রভাবিত হয়ে মনগড়াভাবে ভুলভ্রান্তিপূর্ণ শোকজ নোটিশ করায় দলের তৃণমূলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হাস্যরসের পাশাপাশি জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর একটি গোষ্ঠির এজন্টা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় দলীয় নীতি আদর্শের পরিপন্থী কার্যকলাপ বলে বন্তব্য করছেন উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতারা।
জানা যায়, গত ১০ আগষ্ট সৈয়দ এনামুল হক এনাম পীর ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি বরাবরে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করেন সিলেটে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। প্রেরিত ওই কারণ দর্শানোর নোটিশে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের দিন তারিখ পাল্টিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছে বলে দাবি করে সম্মেলনের দিন দলের গঠনতন্ত্র ও শৃংখলা পরিপন্থী অভিযোগে আনা হয় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ এনামুল হক পরি এনামের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে কালো টাকার ছড়াছড়ি ও প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে একটি গোষ্ঠির এজন্টা বাস্তবায়নে গঠিত উপজেলা বিএনপি বর্তমান কমিটিতে সৈয়দ এনামুল হক এনাম পীর কোন পদে না থাকলেও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক প্রেরিতে শোকজ নোটিশে সৈয়দ এনামুল হক এনাম পীর নামের নিচে পদবী হিসাবে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি লেখা হয়েছে। ১৬ আগষ্ট ডাকা যোগে কারণ জেলা বিএনপির কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে ১৭ আগষ্ট নোটিশের জবাব দিলেও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপি একাধিক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, শহিদ জিয়ার নীতি আদর্শ ভুলে দলের চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনার বাহিরে গিয়ে একটি গোষ্ঠির ব্যক্তিগত স্বার্থ হাছিলে টাকার বিনিময়ে নির্বাচনের নামে প্রহসন করে উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করায় দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের কাছে অভিযোগসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। উপজেলা বিএনপির ওই কমিটিতে ১৫ জন প্রবাসী দেশে না থাকা অবস্থায় উপজেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান দেয়া হয়েছে। উজেলায় বিএনপির প্রকৃত নেতাকর্মীদের কমিটিতে স্থান না দিয়ে টাকার বিনিময়ে হাইব্রিডদের স্থান দেয়া হয়েছে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের প্রেরিত শোকজ নোটিশই তার প্রমাণ। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শোকজপত্রে এত বড় ভুল করতেই পারেন না। টাকার বিনিময়ে সম্মেলন হওয়ার কারণে জনৈক্য হাইব্রিড বিএনপি ওয়ালাদের কথামতো এই শোকজপত্র পাঠানো হয়েছে। যদি জেলা বিএনপি নিজেদের দায়িত্বে ওই শোকজপত্র পাঠাতেন তাহলে কোন তারিখে একটি উপজেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে তা অন্তত দায়িত্বশীলদের জানার কথা। এসব দলের স্বার্থ নয় একটি গোষ্ঠি বা হাইব্রিডদের এজেন্টা বাস্তবায়ন।
এ বিষয়ে সৈয়দ এনামুল হক এনাম পীর বলেন, আমি উপজেলা বিএনপির কোনো পদ পদবিতে না থাকলেও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের প্রেরিত নোটিশে আমার নামের নিচে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি লিখা হয়েছে। এছাড়া ২৫ ফেব্রুয়ারি ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে দাবি করে আমার বিরুদ্ধে দলীয় নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অভিযোগ আনা হলেও গঠনতন্ত্র বিরোধী ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজের সংগঠিত দলের গঠনতন্ত্রের কোন ধারা উপধারা বা অনুচ্ছেদ তার কোন কিছু প্রেরিত ওই নোটিশে উল্লেখ করেন নাই। বিগত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন পরবর্তী যে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় তা সম্পূর্ণ দলের গঠনতন্ত্র এবং বিএনপির সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষের নির্দেশিত মতামতের বাহিরে গিয়ে মনগড়াভাবে করা হয়েছে। ফলে কাউন্সিলকে সাজানো প্রহসনের কাউন্সিল দাবি করছেন অধিকাংশ কাউন্সিলররা। এ বিষয়ে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। এরপরও আমি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে সম্মান জানিয়ে প্রেরিত নোটিশের জবাব দেয়ার পাশাপাশি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ হাইকমান্ডের অন্যান্য দায়িত্বশীলদের অনুলিপি প্রেরণ করেছি। সার্বিক বিষয়ে আমি দলের কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এই বিষয়ে জানতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করার পর তিনি এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত কথা বলবেন বলে জানালেও পরবর্তীতে একাধিকবার মোবাইল ফোন নাম্বারে ফোন দেয়া হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।