শাবির সার্বিক নিরাপত্তা

14

সম্প্রতি সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ। এই হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার প্রশ্ন নতুন করে সামনে চলে এসেছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, ‘ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতেই’ বুলবুল আহমেদ নিহত হয়েছেন। চলতি মাসেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক ঘটছে চুরির ঘটনা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসিক কক্ষ থেকে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকারসহ ক্যাম্পাস থেকে মূল্যবান নির্মাণসামগ্রী চুরি হচ্ছে মাঝেমধ্যেই। এ ছাড়া করোনাকালীন বন্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবনে অন্তত ১০টি চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। লাখ টাকা মূল্যের সাবমার্সিবল পাম্প, এমনকি স্টিলের পানির ট্যাপ ও বাথরুমের ফিটিংসও চুরি হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড। বিকেলের পর থেকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ছাড়াও বাইরে থেকে আসা মাদক কারবারিদের আনাগোনা বেড়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনও শোনা যায়, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, এমনকি আবাসিক হল চত্বরেও প্রায় প্রতি রাতে বসে নেশার আসর।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীর চেয়ে বহিরাগতর সংখ্যা অনেক বেশি। সন্ধ্যার পর পর লাইসেন্সবিহীন বাইক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রহরীদের তোয়াক্কা না করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। একেকটি বাইকে তিন থেকে চারজন উঠলেও গতি থাকে বেপরোয়া, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাগুলোতে চলাচলকারীদের জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীরের কোথাও কাঁটাতার ভাঙা, কোথাও নিচে সুড়ঙ্গের মতো ফাঁকা, আবার কোথাও আদৌ প্রাচীরই নেই। এ কারণে ভেঙে পড়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। আর তাই শিক্ষার্থীদের জন্য অরক্ষিত এই ক্যাম্পাস। এমন অনেক উদাহরণ দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী শুধু নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে আসেন না। ওই শিক্ষার্থীকে ঘিরে একটি পরিবারের স্বপ্নও আবর্তিত হয়। অনাকাক্সিক্ষত যেকোনো ঘটনা একটি পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে দেয়। একটি সম্ভাবনার অপমৃত্যু হয়। কাজেই যেকোনো মূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাসের শান্তি-শৃঙ্খলা অক্ষুণ্ন রাখতে মাদক ও বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ক্যাম্পাসের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পরিদর্শক টিমের নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে হবে।