দুই বার টেন্ডার গায়েব ! ১০ বছরেও ফতেহপুর এর মাত্র দেড় কি. মি রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় ৪ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

5

জৈন্তাপুর থেকে সংবাদদাতা :
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের করিচর ব্রীজ থেকে থেকে হেমু মাঝপাড়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির বুক জুড়ে ছেটো বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল দুরূহ হয়ে পড়েছে। প্রায় ১০ বছর ধরে রাস্তাটি এমন বেহাল হয়ে থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা রাস্তা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেন নি। এতে রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে চার গ্রামের বাসিন্দারা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সংযোগ সড়কের করিচর ব্রীজ থেকে হেমু মাঝপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটির বেহাল দশা। এ রাস্তাটি ১০ বছরে একবারও সংস্কার করা হয়নি। গ্রামে চাঁদা তুলে কখনও বড় গর্তে ইট ফেলে আবার কখনও রাস্তায় মাটি দিয়ে সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে। ভাঙ্গা সড়কে ১০ বছর চলাচল করলেও এবছর বন্যায় (তলিয়ে যাওয়ায়) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ভাঙা অংশ নিয়ে যাতায়াত অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবুও মেরামত করা হয়নি উপজেলার এই সড়কটি। ফলে এ সড়কে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এই সড়কটি। এই চার গ্রামের বেশির ভাগ মানুষের প্রধান আয়ের উৎস কৃষি কাজ। এই খেটে খাওয়া মানুষদের চলাচলের একমাত্র সড়কটির বেহাল দশা যেন দেখার কেউ নেই। তাই ভাঙ্গা সড়ক দ্রুত মেরামতের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
জানা যায়, গ্রামের ওই খেটে খাওয়া মানুষ নিজেরা চাঁদা তুলে বড় বড় গর্তে খ- ইট ব্যবহার করে কোনো রকমে চলাচল করেছেন। ওই রাস্তা নির্মাণ বা সংস্কার নিয়ে স্থানিয় জনপ্রতিনিধিদের চলে ঠেলাঠেলি। যেন তাদের কোন দায় নেই। দেড় কিলোমিটারের এই সড়কে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। সড়কে গর্ত হওয়ায় কেউ অসুস্থ হলে অনেক কষ্ট করে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিতে হয়। এসব গ্রামের মধ্যে রয়েছে- হেমু ভাটপাড়া, মাঝপাড়া, দত্তপাড়া, মাঝরটুল, নমশুদ্র পাড়া।
ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা আব্বাস উদ্দিন বলেন, সড়কটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে এত উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু আমরা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। নিয়মিত জনপ্রতিনিধিদের বলেছি। আমাদের এই সড়কটি কেন যে হচ্ছে না, তা জানা নেই। চার গ্রামের মানুষের বের হয়ে যাওয়ার এটিই একমাত্র সড়ক। এ গ্রামে রয়েছে ১টি দাওরায়ে হাদিস মাদ্রাসা, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব ছাত্র ছাত্রীদের চলাচলের জন্য হলেও সড়কটি সংস্কার খুব জরুরি।
ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক আহমদ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের মতো আশ^াস দিয়ে বলেন, এই সড়ক পাকা করা এখন সময়ের ব্যাপার। আমি চেষ্টা করছি দেখি কি করা যায়।
উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা রিয়াজ মাহমুদ বলেন, আমি নতুন এসেছি, এই সড়ক পাকা করণের জন্য দুই বার টেন্ডার হয়েছে সেটি আমার জানা নেই। উপজেলায় এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের তালিকায় এই সড়কের নাম আছে। আশা করি এটি দ্রুত ব্যবস্থা করা হবে।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে সড়কটি পরিদর্শন করে দেখে আসেছি গত ১০ বছর থেকে সড়ক সংস্কার না হওয়ায় খুব বয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আশাকরি এবার একটা ব্যবস্থা হবে।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই সড়ক পাকা করনের জন্য দুই দুই বার টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু এই কাজ কোথায় গায়েব হয় তা আমার জানা নেই।