টিকার লক্ষ্য পূরণ

2

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি পুনরায় সকল দেশ ও জাতির জন্য করোনার টিকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তাসহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার তিনি জার্মানি এবং গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন আয়োজিত ‘২০২২ গ্যাভি কোভ্যাক্স এ্যালায়েন্স সামিট : ব্রেক কোভিড নাউ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনে যুক্ত হয়ে ধারণকৃত ভিডিও বক্তব্যে এই আবেদন জানান। উল্লেখ্য, গ্যাভি কোভ্যাক্স এ্যাডভান্স মার্কেটের প্রতিশ্রুতির আওতায় বিশ্বের নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য দাতা তহবিল ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারসহ কোভ্যাক্সের জন্য জরুরী আর্থিক সহায়তাকল্পে কমপক্ষে ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করার নিমিত্ত অনুষ্ঠিত হয় নেতা স্তরের বৈঠকটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করে বলেন যে, বাংলাদেশ টিকার সমতা নিশ্চিত করতে তার অংশটি পূরণ করতে প্রস্তুত এবং গ্যাভি ও কোভ্যাক্সের সঙ্গে কাজ করতে অঙ্গীকারবন্ধ। তবে দুর্ভাগ্যবশত কিছু দেশ এখনও পর্যন্ত টিকার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন থেকে পিছিয়ে রয়েছে। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এসব দেশের প্রতি বিশেষ মনোযোগ এবং যথাযথ সহায়তা প্রদান।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি চীন, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে একটি জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতকেও চীন আমন্ত্রণ জানিয়েছে এই জোটে যোগ দিতে। এর উদ্দেশ্য হলো করোনা মোকাবেলায় জরুরী মেডিক্যাল সেবাদান, পরবর্তীতে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং ই-কমার্সের উন্নয়ন। এর ফলে চীনের টিকা পাওয়া সহজ হয়েছে এবং দেশেও উৎপাদনের প্রক্রিয়া চলমান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোপূর্বে জাতিসংঘ ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে করোনার টিকা বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন, যেটি যথার্থ ও সময়োপযোগী। তবে দুঃখজনক হলো, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির আওতায় টিকার মেধাসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও দাম নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। ফলে সারাবিশ্বে টিকার সুষম বণ্টন ও যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ হচ্ছে না। টিকা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উন্নয়নশীল ও গরিব দেশগুলো। ইতোমধ্যে অন্তত কয়েক শ’ কোটি ডোজ টিকা কিনে নিয়েছে বিশ্বের কয়েকটি উন্নত দেশ। ফলে অনুন্নত ও দরিদ্র দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে টিকার জন্য হাহাকার, যা কাম্য নয় কোন অবস্থাতেই। বাংলাদেশ এর জন্য ট্রিপস চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশে প্রায় শুরু থেকেই বিনামূল্যে টিকা সরবরাহ ও প্রয়োগ করা হচ্ছে সরকারী ব্যবস্থাপনায় সারাদেশে। এর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ২৬ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে। টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মোকাবেলার জন্য তৈরি হয়েছে নির্দেশিকা। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষ সাফল্য রয়েছে, যার স্বীকৃতি মিলেছে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক। বাংলাদেশ যথাসময়ে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকাদানের মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনে সক্ষম হবে বলেই প্রত্যাশা।