বিয়ানীবাজারে মানববন্ধনে বক্তারা ॥ মানুষের লোভে লোলা গাঙ ও বাবুর খাল নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে

2

‘মানুষের লোভের কারণে বিয়ানীবাজারের লোলা গাঙ ও বাবুর খাল প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে। বিয়ানীবাজার পৌরসভা বাবুর খালের উৎসমুখ দখল করে বাস স্ট্যান্ড নির্মাণ করেছে। ফলে প্রতি বর্ষায় মাথিউড়া ও তিলপাড়া ইউনিয়নে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। খোদ পৌরসভা নদী ও খাল দখল করে বাস টার্মিনাল নির্মাণ করছে- যা আমাদের অবাক করেছে। দেখে মনে হচ্ছে এখানে নদী খালের অন্যান্য অংশ দখল করার প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুর ১টায় সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভার লাসাইতলায় লোলাগাঙ ও বাবুরখাল অবৈধ দখলমুক্ত করার দাবিতে নবনির্মিত বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বিয়ানীবাজারের সর্বস্তরের জনসাধারণ আয়োজিত মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা এসব কথা বলেন।
স্থানীয় সংগঠক আজিজুর রহমান সেলিম-এর সভাপতিত্বে ও কামাল আহমেদ মতরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে মূল বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম।
তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বিয়ানীবাজার উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও বিয়ানীবাজার পৌরসভা ভেতর দিয়ে প্রবাহিত লোলা নদীর অনেকাংশ দখল করে রেখেছে। মাটিজুড়া গাং ও জমিদার খালের মত লোলা গাং হারিয়ে যেতে বসেছে। শুষ্ক মৌসুমে এই নদীতে পানির কোন চিহ্ন থাকেনা বললেই চলে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ এই নদী খননের দাবী জানিয়ে কর্মসূচী পালন করেছিল। পরবর্তীতে নদী খননের উদ্যোগ নেওয়া হলেও একটি প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীখননের নামে চিরাচরিত উপায়ে করা দূর্নীতিতে সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়।
কিম আরও বলেন, দখলদারদের হাত থেকে যেখানে নদী উদ্ধার করার কথা সেখানে বিয়ানীবাজার পৌরসভা বাবুর খাল দখল করে বাস স্ট্যান্ড নির্মাণ করে এই খালটিকেও খাল নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এই অপকর্মের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিরোধ না গড়ে তোললে বিয়ানীবাজার উপজেলাকে ভবিষ্যতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হবে। তাই অবিলম্বে বাবুর খালের উৎসমুখ থেকে দখল উচ্ছেদ ও লোলা গাং খনন করার দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখা ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্যে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাপা সিলেট শাখার যুগ্ম-সম্পাদক ছামির মাহমুদ বলেন, নদী ও খালের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত রাখার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের হলেও বিয়ানীবাজারের প্রশাসন সে দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ হয়েছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী দেশের নদ-নদী রক্ষার জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন সেখানে স্থানীয় প্রশাসন সে নির্দেশনা অবজ্ঞা করছে। বিয়ানীবাজারের প্রশাসন নদী ও খাল রক্ষার চেষ্টা না করে দখলদারদের সুযোগ করে দিচ্ছে। যা এই অঞ্চলের ইকো সিস্টেম নষ্ট করছে। তাই অবিলম্বে বাবুর খালের উৎসমুখ থেকে দখল উচ্ছেদ ও লোলা গাং বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে খনন করতে হবে।
মানববন্ধন চলাকালে সংহতি জানিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দুষ্কাল প্রতিরোধ আন্দোলনের সংগঠক, ইমজার সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দেবু, ইমজার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক সজল ছত্রী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক ইয়াহইয়া মারুফ।
স্থানীয়দের বক্তব্য রাখেন, আরবাব হোসেন খান, দেলওয়ার হোসেন, ছফর উদ্দিন, ইউপি সদস্য আকবর হোসেন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি