পোশাক শিল্প গতিহীন

8

সারা বিশ্বে চলছে করোনাভাইরাসের দুঃসময়। প্রতিনিয়তই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষ এমন মরণঘাতী সংক্রমণে বিপন্ন, আতঙ্কিত। তার সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। আমদানি ও রফতানি বাণিজ্যেও পড়েছে এর কালো ছায়া। আকাশপথে সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়ে পড়েছে প্রায় স্থবির। করোনাভাইরাসের প্রথম আঘাত হানে চীনের উহান শহরে। হাজার হাজার মানুষের মধ্যে এই রোগ সংক্রমণের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় চীনা বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনায় আসে এক অযাচিত, অনাকাক্সিক্ষত বিপর্যয়। যাতে আন্তর্জাতিক বাজারও পড়েছে এক চরম সঙ্কটে। এর ফলে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নেমে আসছে এক দুর্যোগ। পোশাক শিল্পের কাঁচামাল চীন থেকে বিলম্বে আসার কারণে দেশজ উৎপাদন চরম সঙ্কটের মুখোমুখি। কোন কোন পোশাক কারখানায় উৎপাদনে ধীরগতি, এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চীনের অবস্থার উন্নতি হলেও বিশ্বের অনেক দেশে করোনার সংক্রমণ সম্প্রসারিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে আসে স্থবিরতা, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দেশের জন্য এক অশনি সঙ্কেত।
নির্দিষ্ট সময়ে পোশাক রফতানি দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়লে শিল্পটিতে ধস নেমে আসতে পারে। ইতোমধ্যে ৭৯০ কোটি টাকার রফতানির আদেশ বাতিল করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে ২০টি কারখানায় যোগাযোগ করা হলে অনেকেই তা সাময়িক বন্ধ রাখার পরামর্শ দেন। তবে রুবানা হক এমন আশঙ্কাও করছেন এটি সাময়িকের ব্যাপার নয়। অতীতে এমন সঙ্কটে পড়ার পর সেখান থেকে পুনরায় বাণিজ্যের নতুন পথ তৈরিই হয়নি। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণভাবেও কিছু লেন-দেন কার্যক্রম চালাতে হয়। সেখানেও দেখা দেবে অপূরণীয় ঘাটতি। কারণ উৎপাদিত পণ্য বিশ্ব বাজারে পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হলে পুরো ব্যবস্থাপনায় নেমে আসবে এক ভয়াবহ বিপর্যয়। তবে সরকারের সঙ্গে এসব ঘাটতি নিয়ে আলাপ করা হলে সম্ভাব্য সহযোগিতার আশ্বাস দেয়ার পরও পোশাক খাতটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। চীন থেকে আমদানি বন্ধ রাখায় আমাদের পোশাক শিল্প সমস্যায় পড়লে রফতানির মাধ্যমে তা থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনাটুকুও আমরা হারাতে বসেছি। সঙ্গত কারণে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি খাত পোশাক শিল্পের ভবিষ্যত কি হবে এই মুহূর্তে তা অনুমান করা কঠিন। আতঙ্কিত করোনা অর্থনীতির সচল চাকাকে প্রায় গতিহীন করে দিচ্ছে।