কীর্তিমান পুরুষ বিমলেন্দু দাস সাধু বাবু

9

(পূর্বে প্রকাশের পর)
লালাদিঘীরপার জামে মসজিদ: সাধু বাবু যখন লামাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন তখন এই লালাদিঘীরপার জামে মসজিদের মক্তবের জন্য পৌরসভা থেকে মাসিক টাকা অনুদান হিসেবে মক্তবে দিতেন। লালাদিঘীরপারের মুরব্বী মরহুম রসীদ আলি সাধু বাবুকে অনুরোধ করেন যে, এই মসজিদের দেয়ালের জন্য কিছু ইটের ব্যবস্থা করে দিতে। তখন তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা কদমতলী নিবাসী আব্দুল হামিদকে চিঠি দিয়ে বলেন। তিনি তখন চিঠি পড়ে অভিভূত হয়ে বলেন, “আপনি একজন হিন্দু হয়ে আমার কাছে মসজিদের জন্য ইট চাইছেন।” সঙ্গে সঙ্গে তিনি মসজিদের জন্য ইট দিলেন। এর কিছুদিন পর সাধু বাবু আবার মইনুন্নেসা স্কুলের জন্য ১৫ হাজার ইট চাইলেন। তাতেও তিনি রাজি হয়ে স্কুলের জন্য ইট দিলেন।
কাজলশাহ জামে মসজিদ: যুগলটিলা আখড়ার পাশেই কিছু জায়গা ছিলো। এই জায়গায় মসজিদ করার লক্ষ্যে তখন ভাতালিয়া ও কাজলশাহ থেকে মুরব্বীরা মরহুম ওয়াহিদ মিয়া, আব্দুল ওয়াহিদ, (মিয়াসাব), হাফিজ আকমল হোসেন, আলকাছ মিয়া, মতিন মিয়া, হাজি খুরশিদ মিয়া আসেন সাধু বাবুর কাছে। তখন এরা সবাই ২০০ টাকা সাধু বাবুর হাতে দিয়ে বলেন, এই জায়গায় মসজিদ তৈরীর অনুমতি আনার জন্য। তখন এই যুগলটিলা আখড়ার সেবাইতদের হাতে সাধু বাবু এই ২০০ টাকা দিয়ে বলেন মসজিদের জন্য এই খালি জায়গা দেওয়ার জন্য। তখন সাধু বাবু সবাইকে বলেন, মসজিদ আল্ল¬াহর ঘর এবং মন্দির ভাগবানের ঘর জায়গা দিলে অসুবিধা হবে না। তখন আখড়ার সেবাইত তখন বলেন, আমি কিছু না, আশ্রমের সভাপতি তরণীনাথ দত্ত এবং ফণী গুপ্ত তারাপুর চা বাগানের মালিক এই দুই জনকে বলেন মসজিদের জন্য যুগলটিলার আশ্রমের পাশের জায়গা দিতে। তারা সাধু বাবুর প্রস্তাবে রাজি হলেন। তারপর কাজলশাহ জামে মসজিদ নির্মিত হলো।
কুদরত উল¬্যাহ জামে মসজিদ: সাধু বাবু যখন পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তখন কুদরত উল¬্যাহ জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী মরহুম খন্দকার সোবহান এসে অনুরোধ করেন কুদরত উল¬্যাহ জামে মসজিদের জায়গা বাড়ানো এবং মার্কেট করার জন্য লালদিঘীরপার থেকে কিছু জায়গা দেওয়ার জন্য। সাধু বাবু তখন সঙ্গে সঙ্গে পৌরসভার একটি সভা আহবান করেন এবং খন্দকারের কাছ থেকে একটি দরখাস্ত গ্রহণ করেন। এই সভায় মসজিদকে জায়গা দেবার জন্য অনুমতি প্রদান করা হয়। যেহেতু এই জায়গার ট্যাক্্র তখন হিন্দুরা দিত বলে এই জায়গায় ১ টাকা মূল্য ধরে জায়গা দেওয়া ইউক। আগে জায়গা দিত চিটাগাং ডিভিশনের কমিশনারের কাছ থেকে অনুমোদন এনে জায়গা মসজিদের জন্য উনাদের কাছে বন্দোবস্ত দেই। এর কিছুদিন পর খন্দকার বন্দরবাজার ও লালবাজারের সব মানুষ ডেকে বলেন, আগে পৌরসভায় মুসলমান দুইজন চেয়ারম্যান থাকতে আমরা মসজিদের জন্য জায়গা পাইনি। কিন্তু হিন্দু চেয়ারম্যান সাধু বাবু যখন এই পৌর চেয়ারম্যান হলেন তখন আমরা মসজিদের জন্য জায়গা বরাদ্দ পেলাম। (চলমান)