ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবি

13

নিত্য ভোগ্যপণ্যের দাম এখন আকাশছোঁয়া। চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ বিভিন্ন প্রকার পণ্যের দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস হওয়ার উপক্রম। আগামী এপ্রিল থেকে শুরু হবে মাহে রমজান। পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে সরকার ভোগ্যপণ্যের দাম সাশ্রয়ী ও সরবরাহ বাড়াতে টিসিবির পণ্য সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি থামাতে সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবিকে পণ্য সরবরাহে নামানোর তাগিদ এসেছে খোদ কর্তৃপক্ষ থেকে। প্রতিবার বিভাগীয় শহরগুলোতে যেভাবে টিসিবির পণ্য সীমিত আকারে চালু করা হতো সেটা এখন সম্প্রসারিত পর্যায়ে সারাদেশে বিতরণ করা হবে। অর্থাৎ ইউনিয়ন পর্যায়ে এমন পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে যারা নিত্য এসব কিনতে হিমশিম খায়। রমজানের আগে ও মাঝামাঝি সময়ে দুই দফায় তেল, চিনি, ডাল, পেঁয়াজ ও খেজুরের মতো আবশ্যিক পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। আবার দেশের স্বল্প আয়ের কোটি পরিবারে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ থেকে ভর্তুকি মূল্যে খাদ্য সহায়তা পাওয়ার সুযোগ তৈরি করছে সরকার। সারাদেশে টিসিবির এই সহায়তা সম্প্রসারিত করতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় উদ্যোগ নিয়েছে।
এখন থেকেই সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহ একযোগে কাজ করে যাবে যাতে রমজানের সময় পণ্যমূল্য মাথাচাড়া দিতে না পারে। সরকারপ্রধানের নির্দেশনায় ইতোমধ্যে অনেক কাজ শুরু করা হয়েছে। সরকারী সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়াও বাজারদর যেন লাগামছাড়া না হয় সেদিকেও কঠোর নজরদারি রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশের নিত্য ভোগ্যপণ্য মূল্যের যে ওঠানামা সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজি নতুন কিছু নয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পেঁয়াজকে নিয়ে যে কারসাজি শুরু হয়েছিল কুচক্রী মহলের সেটাও এক অনাকাক্সিক্ষত সঙ্কট বলাই যায়। সব সময় মুনাফালোভীরা ওঁৎ পেতে থাকে নিত্যপণ্যের বাজারকে অসহনীয় করে তুলতে। যার মাধ্যমে তাদের অসদুপায়ে মুনাফা অর্জনেরও একটি বিষয় প্রচ্ছন্ন থাকে। সুতরাং এসব অসাধু ব্যবসায়ীর ওপর কঠোর নজরদারি জরুরী। জনবান্ধব কার্যক্রমে কোন মহলের কালোছায়া পড়তে না দেয়ার ব্যাপারে সরকার সতর্ক রয়েছে।
ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আগের মতোই টিসিবির পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল কোন পারিবারিক কার্ড দেয়া হবে না। তবে জেলা শহর ও পৌরসভায় টিসিবির সহায়তা নিতে নাম তালিকাভুক্ত করা একান্ত আবশ্যক। কোন ব্যক্তি যাতে একাধিকবার পণ্য নিতে না পারে সেটি তীক্ষè পর্যবেক্ষণে আনতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। এক ট্রাক থেকে পণ্য নেয়ার পর অন্য ট্রাকে যাতে কেউই কিছু নিতে না পারে সেদিকেও নজরদারি বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে।
সবদিক বিবেচনায় রেখে পুরো কার্যক্রমকে তার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে দেয়াও পরিস্থিতির দাবি। এমন মহৎ এবং ব্যাপক উদ্যোগ যাতে কোন প্রকার বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই সংশ্লিষ্ট মানুষের মধ্যে অবারিত হতে পারে সেটাই প্রত্যাশিত। সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা, বাজার ব্যবস্থা সচল এবং নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার অবিলম্বে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।