সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে প্রবাসীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

5

স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমার জালালপুর ইউনিয়নের সমসপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাসান আহমদের প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে একই ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের বাসিন্দা মরহুম মাওলানা জমিরুদ্দিনের পুত্র জামায়াত নেতা তালহা মোস্তফার বিরুদ্ধে। বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী হাসান আহমদের পক্ষে এমন অভিযোগ করেন তার ভাতিজা সমসপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান আকইয়ের পুত্র নুরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে মো. নুরুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাসান আহমদ ২০১২ সালে দেশে আসলে তালহা মোস্তফা উনার বাড়িতে গিয়ে একটি লাভজনক ব্যবসায় টাকা বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দেন। প্রথম দিকে তিনি বিনিয়োগ করতে রাজী না হলেও তালহা মোস্তফার বারবার যোগাযোগ এবং কথাবার্তায় বিশ্বাস করে ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে রাজী হন। বিশেষ করে তালহার পিতা একজন জমিরুদ্দিন সম্মানিত ব্যক্তি হওয়ায় তালহাকে বিশ্বাস করেন হাসান আহমদ। তালহা মোস্তফা তাকে বলেন ম্যাক্সিম মাল্টিপারপাস কোং অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে তার একটি কোম্পানী রয়েছে। তিনি ও তার অন্যান্য ভাইয়েরা কোম্পানীর সকল কার্যক্রম ও ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করেন। তাই এ ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কিংবা দেউলিয়া হওয়ার মতো কোন সন্দেহ নেই। তালহা মোস্তফা প্রবাসী হাসান আহমদকে দশ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের আহবান জানান এবং বলেন, আপনার টাকা ডিড অনুযায়ী পাবেন। প্রবাসীরা এই কোম্পানীতে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। যদি কোম্পানী দেউলিয়া হয় অথবা ব্যবসায় ভাটা পড়ে তারপরেও লাভে আসলে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাবেন।
নুরুল ইসলাম বলেন, তালহার এসব কথায় সম্পূর্ণ বিশ্বাস রেখে হাসান আহমদ ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাঁচ লক্ষ টাকা এবং ২৯ ফেব্রুয়ারি আরও পাঁচ লক্ষ টাকা মোট দশ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। টাকা লেনদেনের সম্পূর্ণ প্রমাণাদি হাসান আহমদের নিকট রয়েছে। চুক্তিনামা অনুযায়ী মূল টাকা দিয়ে কোম্পানীর ব্যবসা পরিচালনা হবে মুনাফা প্রতি মাসে পরিশোধ করার কথা উল্লেখ করা হয়। সেইসাথে চুক্তিনামার মেয়াদ শেষে মূল টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হবে বলে লিখিত চুক্তি হয়। তারপর তালহা মোস্তফাকে টাকা দেওয়ার কিছুদিন পরে হাসান আহমদ লন্ডনে চলে যান। লন্ডন থেকে তালহার সাথে টেলিফোন যোগাযোগ হয় প্রায় বছর খানেক। তারপর তালহা ফোন বন্ধ করে দেন। কোন অবস্থায় চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি হাসান। এরপর বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করলেও তালহা টাকা না দিয়ে উল্টো ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে হাসান আহমদ দেশে আসলে তালহা তাকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডেকে নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। বর্তমানে লাভে আসলে হাসান আহমদ তালহার নিকট বত্রিশ লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা পাবেন। হাসান আহমদ বিষয়টি সাবেক সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুর রহমানকে অবগত করেছেন। এছাড়া হাসান আহমদ গত ১০ আগষ্ট এসএমপির পুলিশ কমিশনার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মোগলাবাজার থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. শাহজাহান ভূঁঞা তদন্ত করে হাসান আহমদের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে কমিশনার কার্যালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রবাসী হাসান আহমদ।