সিলেট শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর সর্বোচ্চ পাসের হার ৯৬.৭৮% রেকর্ড ॥ গতবারের চেয়ে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে ৫৭১ টি, জিপিএ-৫ এ মেয়েরা এগিয়ে

9
এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষার্থীরা। ছবিটি সিলেট অগ্রগ্রামী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। ছবি-মামুন হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার :
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৩০ডিসেম্বর সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফল ঘোষণা করেন।
সিলেট বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় সর্বোচ্চ পাসের হার এবছর রেকর্ড করা হয়েছে। বোর্ডের অধীন ২০১২ সালে সর্বোচ্চ পাসের হার ছিল ৯১ দশমিক ৭৮। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৭৮ রেকর্ড করা হয়েছে। ২০০১ সালে বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এটিই সর্বোচ্চ পাসের হার।
সিলেট বোর্ডে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৫৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৮৩৪ জন। গত বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৬৩। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিও এবার এই বোর্ডে সর্বোচ্চ।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দক্ষিণ সুরমার আলমপুর এলাকার সিলেট বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে এই ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের সচিব মো. কবির আহমদ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পাল।
ফলাফল ঘোষণার সময় তারা জানান, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় এবার ভালো ফলাফল হয়েছে। এ ছাড়া মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীরা এবার ভালো ফলাফল করেছে। এ ছাড়া এবার গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা না থাকায় পরীক্ষার্থীরা আরও ভালো ফলাফল করতে পেরেছে বলে মন্তব্য করেন তারা।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সিলেট বোর্ডের অধীন সর্বোচ্চ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। গত বছর বোর্ডের অধীন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪০৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এবার গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ১৪৬ জন পরীক্ষার্থী বেশি অংশ নিয়েছিল। গতবারের তুলনায় এবার ৫৭১ জন শিক্ষার্থী বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে। শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বেড়েছে এবার। সিলেট বোর্ডের অধীন এবার ১৮৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। গতবারের তুলনায় এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৪২টি।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সিলেট বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৪৫৪ জন, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২৯ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫১ জন। সিলেট জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ২৯৮ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলে ১ হাজার ৩৩ জন ও মেয়ে ১ হাজার ২৬৫ জন।
হবিগঞ্জের ৮৬৯ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৪৫ জন ছেলে এবং ৫২৪ জন মেয়ে।
মৌলভীবাজারে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০৪০ জন। এর মধ্যে ৩৯৬ জন ছেলে এবং ৬৪৬ জন মেয়ে।
সুনামগঞ্জ জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন মাত্র ৬২৭ জন। এর মধ্যে ২৫৪ জন ছেলে এবং ৩৭৩ জন মেয়ে।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে চলতি বছর নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। সংক্রমণ কিছুটা কমে এলে নির্ধারিত সময়ের সাড়ে ৮ মাস পর গত ১৪ নভেম্বর এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষায় ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এ পরীক্ষা নেয়া হয়। গতবারের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন বেড়েছে। গতবার পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন। এবারের এসএসসি পরীক্ষা হয় শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। অন্যান্য আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হয়।