আইএসের বিরুদ্ধে গোপন যুদ্ধে তালেবান

7

কাজিরবাজার ডেস্ক :
পূর্ব আফগান শহর জালালাবাদের উপকণ্ঠে কয়েকদিন পরপর মরদেহ ফেলা হয়। নিহতদের মধ্যে কাউকে গুলি, কাউকে ফাঁসি অথবা কাউকে শিরশ্ছেদ করা হয়েছে। তাদের পকেটভর্তি হাতে লেখা নোট, যাতে লেখা, তারা ইসলামিক স্টেটের আফগান শাখার সদস্য। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের দায় নিচ্ছে না কেউ। তবে ধারণা করা হয়, এতে তালেবানেরই হাত রয়েছে। শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত আগস্টে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় আইএস। এ ঘটনায় ১৫০ জনের বেশি নিহত হন। তালেবানের অন্যতম শত্রু বলে বিবেচনা করা হয় আইএস’কে। এ গোষ্ঠী দুটি বর্তমানে আফগানিস্তানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত। বিশেষ করে, দেশটির জালালাবাদে দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে। তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে আফগানিস্তানে আগের তুলনায় তুলনামূলক শান্তি ফিরেছে। কিন্তু জালালাবাদে তালেবান সদস্যরা ক্রমাগত হামলার শিকার হচ্ছেন। তালেবান আগে যেভাবে আত্মঘাতী হামলা চালাতো, এখন আইএস একই কৌশলে হামলা চালাচ্ছে। তলেবান যথেষ্ট কট্টরপন্থি না হওয়ায় আইএস তাদের মুরতাদ আখ্যা দিয়েছে। অন্যদিকে, তালেবান আইএস’কে ‘ধর্মদ্রোহী চরমপন্থি’ বলে অভিহিত করেছে।
তালেবানের গোয়েন্দা শাখার প্রধান ড. বশিরের বাড়ি নানগারহার প্রদেশের জালালাবাদে। অতীতের কর্মকাণ্ডের জন্য তার অনেক কুখ্যাতি রয়েছে। তবে প্রতিবেশী কুনারে একটি শক্ত ঘাঁটি থেকে আইএস’কে বিতাড়িত করতে সাহায্য করেছিলেন তিনি।
জালালাবাদের রাস্তার পাশে পড়ে থাকা মরদেহের ব্যাপারে তালেবানের যোগসূত্রের কথা অস্বীকার করেছেন ড. বশির। তিনি বলেছেন, তাদের কর্মীরা বেশ কিছু আইএস সদস্যকে আটক করেছে। গানি সরকারের সময় বহু আইএস সদস্য আফগান কারাগারে বন্দি ছিল। কিন্তু এ বছরের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর ব্যাপক বিশৃঙ্খলার মধ্যে তারা পালিয়ে যায়।
তালেবান বলছে, আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে। তারা আফগানিস্তানে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে। তবে, অসংখ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ড. বশির দাবি করেছেন, আফগানিস্তানে আইএসের উপস্থিতি নেই।
তিনি বলেন, ‘দায়েশ’ নামটি সিরিয়া ও ইরাকের সঙ্গে সম্পর্কিত। আফগানিস্তানে দায়েশ নামে কোনো দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী নেই। তবে হ্যাঁ, কিছু বিশ্বাসঘাতক রয়েছে, যারা ইসলামিক আফগান সরকারের বিরুদ্ধে।
এ মাসের শুরুতে আফগানিস্তানের কুন্দুজ ও কান্দাহারে শিয়া মসজিদে পরপর দুই শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় হামলা চালায় আইএস। এরপরও ড. বশিরের ভাষ্য, উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা বিশ্বকে বলতে চাই, চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। যদি কোনো বিশ্বাসঘাতক গোষ্ঠী থেকে থাকে, বিশেষ করে যারা হামলা চালাচ্ছে, তাদের আমরা পরাজিত করবো। প্রতিরোধ যুদ্ধের অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। আমার খুব সহজেই তাদের পরাজিত করতে পারবো।
সম্প্রতি আইএসের কয়েক ডজন সদস্য তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।