২৫ হাজার বছর আগেও করোনা থাবা বসিয়েছিল

3

কাজিরবাজার ডেস্ক :
আজ থেকে ২৫ হাজার বছর আগেও পৃথিবীতে করোনা থাবা বসিয়েছিল। সেবার ইউরোপ, আমেরিকা নয় এ রোগে বেশি ভুগেছিল এশিয়ার মানুষ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক এ চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা ও অস্ট্রেলিয়ার এ্যাডিলেইড ভার্সিটির একদল গবেষক মানবদেহের জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করতে গিয়ে এই তথ্য আবিষ্কার করেন। ওই সময় মহামারীর বিরুদ্ধে মানবদেহে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে, তার সঙ্গে বর্তমান সময়ের সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ ক্ষমতার মিল রয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, অতীতে অতিমারীর প্রকোপে মানবদেহে জিনের যে বিবর্তন ঘটেছে, সে সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাওয়া গেলে করোনার সকল ধরনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হতে পারে। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের। ইউনিভার্সিটি অব আরিজোনার বাস্তুতন্ত্র এবং বিবর্তনবাদের শিক্ষক ডেভিড এনার্ড বলেন, চিরকালই মানুষের ওপর ভাইরাসের হানা চলে আসছে। মানুষের জিনের স্বাভাবিক বিবর্তনের অন্যতম চালিকাশক্তি ভাইরাস। কারণ জিনই মানুষকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের মধ্যেও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এটাও সত্যি যে, অতীতে যা ঘটেছে ভবিষ্যতে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটে। এনার্ড এবং তার সহযোগীরা ২ হাজার ৫০৪ মানুষের ২৬ রকম প্রজাতির জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে হাজার হাজার বছর আগে করোনা সংক্রমণের হদিস পেয়েছেন। বিভিন্ন বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় ইতোমধ্যেই তাঁদের গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এনার্ড এবং তাঁর সহযোগীদের দাবি, কেউ যখন সংক্রমিত হন, তার কোষের যাবতীয় কলকব্জা কার্যত দখল করে বসে করোনা, যাতে কোষের প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে তারা।
মানবদেহে উপস্থিত বিভিন্ন রকমের প্রোটিন ব্যবহার করে তারা এই কাজ করে। কিছু প্রোটিন আবার করোনার বিরুদ্ধে কোষগুলোকে লড়তেও সাহায্য করে। গবেষকদের দাবি, পূর্ব এশীয় বংশোদ্ভূত মানুষের জিন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাদের সঙ্গে করোনার আগে থেকেই পরিচিতি রয়েছে। মানবদেহের ৪২০ প্রোটিন নিয়ে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা। তার মধ্যে ৪২ প্রোটিনের সঙ্গে ৫ হাজার বছর আগেও করোনার নানা রূপের পরিচিতি ঘটে। দীর্ঘদিন ধরে ওই ভাইরাসের সঙ্গে প্রোটিনগুলোর প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাই তাদের ধারণা, অতীতেও দীর্ঘদিন মানুষকে ভুগিয়েছে করোনা। ওই ভাইরাস সত্যিই সত্যিই সার্স-কোভ-২ কিনা, তা জানতে আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে দাবি তাদের। ২০১৯ সালের শেষদিকে চীনেই করোনার প্রকোপ দেখা দেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা পৃথিবীতে। তবে এর আগে, ২০০২ সালে চীনে সার্সের (সিভিয়ার এ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) প্রকোপ দেখা দেয়। সেবার প্রায় ৮ হাজার মানুষ সংক্রমিত হন। মারা যায় ৮শ’ জন। এর চার বছর পর হাজির হয় মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম)। তাতে ২ হাজার ৪০০ জন সংক্রমিত হন। মৃত্যু হয় ৮৫০ জনের। সেখান থেকেই করোনার উদ্ভব এবং বর্তমানে তার বিভিন্ন রূপ ও ধরন গোটাবিশ্বে থাবা বসিয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।