সুরমা গেইটে সেই ভুয়া সাংবাদিক ফয়ছল কাদির গ্রেফতার

5

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট তামাবিল সড়কের খাদিম সুরমা গেইটে সেই ভুয়া সাংবাদিক ফয়ছল কাদিরকে গ্রেফতারের পর প্রেস ব্রিফিং করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)-৯। গতকাল বুধবার বেলা ২টার দিকে র‌্যাব-৯ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ফয়ছল কাদিরের নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরা হয়।
প্রেস ব্রিফিংকালে র‌্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সামিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী চলমান লকডাউন বাস্তবায়নে গত ৯ জুলাই সিলেটের শাহপরাণ থানার সুরমা গেটে চেকপোস্ট বসিয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন একদল ট্রাফিক পুলিশ। এদিন বিকেলে হেলমেটবিহীন ৩ আরোহী নিয়ে কাগজপত্রবিহীন একটি মোটরসাইকেলে চড়ে সুরমা গেট দিয়ে যাচ্ছিলেন ভুয়া সাংবাদিক ফয়ছল কাদির।
এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট তাকে আটক করলে তিনি মোটরসাইকেলের কাগজপত্র এবং নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্সও দেখাতে পারিনি। উপরন্তু উত্তেজিত হয়ে তার একটি ফেসবুক পেজ থেকে লাইভের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীকে হেয় করার উদ্দেশ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা তথ্য প্রচার শুরু করেন। এ ঘটনার পর ফয়ছলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর পর থেকে তার উপর আমরা নজর রাখছিলাম। অবশেষে মঙ্গলবার ১৪ জুলাই দিনগত মধ্যরাতে সিলেট সদর উপজেলার পীরেরবাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মো. সামিউল আলম আরও বলেন, গ্রেফতারের পর ফয়ছল কাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং এর বাইরেও আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পেরেছি- তার মূল পেশা হচ্ছে সিএনজি অটোরিকশার টুকেন বাণিজ্য ও নানা ভুঁইফোড় পত্রিকার স্টিকার বাণিজ্য। এর মাধ্যমেই সে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে। প্রেস ব্রিফিংয়ের পর বিকেল ৩টার দিকে ফয়ছল কাদিরকে এসএমপির শাহপরাণ থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।
হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাহপরাণ থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান। তিনি বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বলেন, হস্তান্তরের পর ফয়ছল কাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।
এর আগে মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টার দিকে শাহপরাণ থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, ফয়ছল কাদেরকে দুই দিন থেকে গ্রেফতার করতে শাহপরাণ থানা পুলিশের দল পৃথক পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়েছে। তবে সে আত্মগোপনে ছিলো। অবশেষে মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে ফয়ছলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৯।
উল্লেখ্য, লকডাউন চলাকালে গত ৯ জুলাই নিজের কাগজপত্রবিহীন মোটরসাইকেল আটক করায় ক্ষুৃব্দ হয়ে ফেসবুক লাইভ করেন ফয়ছল কাদির (৪০) নামের এক ব্যক্তি। লাইভে যিনি নিজেকে সাংবাদিক বলে পরিচয় দেন। ফেসবুকে লাইভ করার ঘটনায় রোববার রাতে শাহপরান থানায় ফয়ছল কাদিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সিলেট মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মো. নুরুল আফসার ভূইয়া। ফয়ছল কাদির ‘পৃথিবীর কণ্ঠ (পিকে) টিভি’ নামে ফেসবুক ভিত্তিক একটি পেজ পরিচালনা করেন। ফেসবুকে নিজেকে পিকে টিভির সম্পাদক ও মাতৃজগত নামের একটি পত্রিকা সিলেট ব্যুরো প্রধান হিসেবে দাবি করেছেন ফয়ছল। তবে সিলেটের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তাকে সাংবাদিক হিসেবে চিনেন না বলে জানিয়েছেন।