বাংলাদেশী সহ প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়োগ ফি কমাচ্ছে মালয়েশিয়া

2

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকসহ আরও যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশটির কৃষি খামার ও কলকারখানায় কাজ করেন, নিয়োগ পাওয়ার জন্য তাদের প্রদত্ত ফি এবং কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে তাদের স্বাক্ষরিত চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সারাভানান মুরুগন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৈশ্বিক মানবপাচার বিষয়ে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ট্রাফিকিং ইন পারসন্স (টিআইপি) শিরোনামে করা সেই প্রতিবেদনে মালয়েশিয়াকে ‘টায়ার থ্রি’ বা গুরুতর অবস্থানে রাখা হয়েছে। টিআইপি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। আরও বলা হয়, প্রবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়োগ ফি নেয়ার ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানছেন না কর্মক্ষেত্রের কর্তৃপক্ষ, তাদের যথাযথ পারিশ্রমিক দেয়া ছাড়াই বাধ্যতামূলকভাবে কাজ করানো হচ্ছে এবং কর্মক্ষেত্রে নিয়োগ দেয়ার সময় শ্রমিকদের সঙ্গে যে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল তার শর্তসমূহও মানছেন না অনেক মালিক।
সোমবারের বিবৃতিতে সারাভানান মুরুগন বলেন, ‘শ্রমিকদের, বিশেষ করে অভিবাসী শ্রমিকদের জোরপূর্বক শ্রমদানে বাধ্য করার অভিযোগ সরকার গুরুত্বসহকারে দেখছে। শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ ও পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে সরকারের ধারাবাহিক তৎপরতা অব্যাহত আছে।’ ‘অনেক সময় মালিকপক্ষ অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়োগ ফি নেয়ার ক্ষেত্রে আইন মানছেন না এবং চাকরি বিষয়ক চুক্তির শর্তসমূহ লঙ্ঘন করছেন- এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তে অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়োগ ফি এবং চাকরির চুক্তি সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখবে সরকার।’
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, গত মে মাসে অভিবাসী শ্রমিকদের অবস্থা জানতে একটি নতুন মোবাইল এ্যাপ চালু করেছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। চালু কারার পর মে মাস থেকে জুলাই পর্যন্ত অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে মোট ৪ হাজার ৬৩৬টি অভিযোগ এসেছে সেই এ্যাপে। এই অভিযোগসমূহের মধ্যে ইতোমধ্যে মোট ৩ হাজার ৫০২টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। বাকিগুলোর বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মালয়েশিয়ার কৃষি খামার ও শিল্প কারখানাসমূহে বর্তমানে কাজ করছেন প্রায় ২০ লাখ অভিবাসী শ্রমিক। এদের প্রায় সবাই বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল থেকে দেশটিতে গিয়েছেন।