লকডাউনে বিয়ানীবাজারে নিম্ন আয়ের মানুষ বিপাকে

14

বিয়ানীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
সারাদেশের ন্যায় বিয়ানীবাজারেও সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। এ লকডাউনে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষজন। বরাবরের মতো যারা দিনে সর্বনিম্ন ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা ইনকাম করে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে বাড়ি নিয়ে যান, এই লকডাউনে তাদের অবস্থা একেবারেই নাকাল।
সরজমিন বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারঘুরে দেখা গেল নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষদের জীবনযাত্রার করুণ চিত্র। বাজারে মানুষজন না থাকায় রিক্সা চালকদের অবস্থা দুর্বিষহ। কোন উপায়ান্তর না দেখে অনেকে রিক্সা বন্ধ করে দিয়েছেন আবার অনেকেই পেটের দায়ে বেরিয়ে পড়েছেন রিক্সা নিয়ে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটির চাকা যখন বন্ধ হয়ে যায় তখন পরিবারের সকল সদস্যকেই না খেয়ে থাকতে হয় বলে চালকরা।
রিকশা চালক বাহার উদ্দিন বলেন, লকডাউনের মধ্যে রিকশা বের হলেও পয়েন্টে পয়েন্টে পুলিশি বাধার মধ্যে পড়তে হয়।।বারে বারে চাবি নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য বের হওয়া।
ভ্যানচালকদের অনেকেই বলেন, দিনে যত টাকা ইনকাম হতো তা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোন মতে ডাল-ভাত খেয়ে দিনযাপন হতো। কিন্তু এ লকডাউন আমাদের জন্য মরার উপর খাড়ার গা হয়ে দেখা দিয়েছে। দোকানপাঠ বন্ধ থাকায় বাজারে সারাদিন অপেক্ষা করতে করতে বিকেল বেলা শূন্য হাতে ঘরে ফিরতে হয় তাদের। কিভাবে চলবো আমরা কিছুই বুঝে আসেনা।
ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না থাকায় গাড়ি নিয়ে বের হওয়া সিএনজি চালক জানান, প্রশাসনের কড়াকড়িতে গাড়ি চালানো সম্ভব হচ্ছেনা। লকডাউনের এই মুহূর্তে খেয়ে বেচে থাকা কঠিন হয়ে গেছে। তাই তো প্রশাসনের কড়াকড়িতেও গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়েছে।
দারিদ্র্যতার সাথে সর্বদা সংগ্রাম করে যাওয়া মানুষজনদের অবস্থা এ লকডাউনের কঠিনতম হয়ে পড়েছে। অভাবের তাড়নায় যে বা যারা রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন, যাত্রী কিংবা মালের অপেক্ষায় বসে থেকে দিন পার করতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষদের। ৩৩৩-তে ফোন করে খাদ্য সহায়তা প্রাপ্তির সরকারি সুযোগের পক্রিয়া অনেকের জানা নেই। কিভাবে সাহায্য পাওয়া যায় তাও জানেন না তারা।
জানতে চাইলে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর বলেন, লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে ৩৩৩ ফোন করে খাদ্য সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ চালু করেছে সরকার। সরকারি সহায়তার নাম্বারে ফোন করার পর তারা বিভিন্ন মাধ্যমে উপকারভোগীর পরিবারের অবস্থা যাচাই করেন। এরপর খাদ্য সহায়তা দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও উপকারভোগীর প্রকৃত অবস্থা জানতে চেস্টা করা হয়। এরপর অসহায় ওই ব্যক্তির হাতে খাদ্য সহায়তার প্যাকেট তুলে দেয়া হয়। ইতিমধ্যে উপজেলায় ১৫৮ টি পরিবারের মধ্যে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।