শামসুদ্দিন ও ওসমানী হাসপাতাল সহ সিলেটের কোথাও করোনা চিকিৎসার আইসিইউ বেড খালি নেই

23

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সিলেট বিভাগের কোটি মানুষের জন্য সরকারিভাবে রয়েছে মাত্র ২৯ আইসিইউ বেড। যার ১৬টি সিলেটের ডা. শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ আছে আরো ৮টি। এবং মৌলভীবাজারে রয়েছে মাত্র ৫ আইসিইউ শয্যা কিন্তু মৌলভীবাজারের এ শয্যাগুলোতে এখনো কেন্দ্র্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা নেই। অপরদিকে হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ আর ভারতের সীমান্তঘেঁষা হবিগঞ্জে নেই কোনো আইসিইউ শয্যা। এমন অবস্থায় সিলেটজুড়ে আইসিইউর জন্য চলছে হাহাকার। সেই সঙ্গে আইসিইউ না পেয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা কিন্তু বাড়ছে না আইসিইউ শয্যা। এমনকি বাজেট না থাকায় কাঠামো নির্মাণ হলেও থমকে আছে ওসমানী হাসপাতালের আরো ১০ শয্যার কাজ।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শামসুদ্দিন হাসপাতালের ১৬টির মধ্যে দু’টি সার্বক্ষণিক ডায়ালাসিসের জন্য বরাদ্দ থাকার কথা থাকলেও এখন খালি রাখা হয়েছে মাত্র ১টি। বাকি ১৫টিতেই রোগী ভর্তি। অপরদিকে ওসমানী হাসপাতালের সব বেডেই রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। খালি নেই মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের আইসিইউ বেড। প্রতিদিন এসব হাসপাতালে আসছে অগণিত ফোন। চাওয়া হচ্ছে করোনা রোগীর জন্য আইসিইউ বেড। সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আরএমও মিজানুর রহমান বলেন, গেল প্রায় ১৫ দিন থেকেই আমাদের এখানে কোনো আইসিইউ বেড খালি নেই। এমনকি সিলেটের কোথাও খালি আছে বলেও আমার জানা নেই। প্রতিদিন আমাদের কাছে অসংখ্য কল আসছে আইসিইউর জন্য। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকেও ফোন দিয়ে চাওয়া হচ্ছে কিন্তু আমরা পারছি না। প্রতিদিন বিভিন্ন জন কল করে জানতে চাচ্ছেন, স্যার একটি আইসিইউ বেড হবে কি? অথচ আমাদের ওয়ার্ডে যারা ভর্তি তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে ৫ জনের আইসিইউ লাগে। তাদেরই দিতে পারছি না। আসলে আমরা অসহায়। কারণ আমাদের এখানে দু’টি বেড সার্বক্ষণিক ডায়ালাসিসের জন্য খালি রাখতে হলেও এখন চাপ বাড়ায় মাত্র একটি বেড ডায়ালাসিসের জন্য রেখে বাকি ১৫টিতেই রোগী ভর্তি। এদের মধ্যে কেউ উন্নতি করলে অথবা মারা গেলে তবেই অন্যজন সুযোগ পাচ্ছেন। দিকে সরকারি হাসপাতালের এসব আইসিইউর বাইরেও সিলেট নগরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীর জন্য কিছু আইসিইউ বেড রয়েছে। এরমধ্যে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ১৮টি, মাউন্ড এডোরা হাসপাতালে ৯টি ও নুরজাহান হাসপাতালে আরো ১১টি আইসিইউ বেড রয়েছে। তবে এসব হাসপাতালে আইসিইউ বেডে রোগী ভর্তি করলে গুনতে হয় লাখ লাখ টাকা। তাছাড়া এখন এগুলোতেও শয্যা খালি নেই। তবে সিলেটে আইসিইউ সংকট নিরসনে এতদিন কিছুটা আশার খবর থাকলেও সংকটকালে এসে শোনা গেল হতাশার খবর। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এতদিন আরো ১০ বেড আইসিইউ বাড়ার কথা জানানো হলেও এবার নানা কারণে তা থমকে থাকার সংবাদ জানালেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়। তিনি বলেন, আরো ১০ শয্যার একটি আইসিইউ ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ থেকে এটার কাঠামোগত কাজ হয়েছে কিন্তু কেন্দ্র্রীয় অক্সিজেন বা যন্ত্রাংশের বাজেট না থাকায় তা এখন হচ্ছে না।