সুনামগঞ্জে লকডাউনে দিশেহারা দিনমজুররা, মিলছে না ত্রাণ সহযোগিতা

8

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
ভ্যান চালিয়ে আয় রোজগার করে সংসার চলে। লকডাউনের কারণে ভ্যান নিয়ে বের হওয়া যায় না। ৭-৮ দিন ধরে দুই টাকাও আয় করতে পারছিনা। খুব সমস্যায় দিন পার করছি পরিবার নিয়ে। গত বছর লকডাউনে সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা পেলেও এবার কোনো সাহায্য পাচ্ছি না। খেয়ে না খেয়ে ছেলে সন্তান নিয়ে কষ্টে আছি। এভাবে চলতে থাকলে মরা ছাড়া কোনো গতি নাই। এইভাবেই নিজের পরিবারের অসহায়ত্বের কথা জানাচ্ছিলেন লকডাউনবন্দি দিনমজুর সুনামগঞ্জ পৌরসভার তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা লনী দাশ।
সর্বাত্মক লকডাউনে লনী দাশের মতো নিম্ন আয়ের এমন অসংখ্য পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কড়াকড়ি লকডাউনের কারণে ঘরতে থেকে বের হতে পারছেন না পরিবারে উপার্জনকারী ব্যক্তিরা। ফলে খাদ্যাভাবে দিশেহারা ভ্যানচালক, রিক্সা শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, ইমারত নির্মাণ কর্মী, ক্ষুদ্র ব্যবাসী, দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের এসব পরিবারের লোকজন। তাই লকডাউন চলাকালে সরকারি বেসরাকারি সহযোগিতা কামনা করছেন তারা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে ন্যায় সুনামগঞ্জেও ষষ্ঠ দিনের মতো ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার লকডাউনের সাত দিনের সময়সীমা শেষ হলেও নতুন করে আরও ৭ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। লকডাউনের সময়সীমা বাড়লেও সরকারিভাবে এখনও ত্রাণ সযোগিতা বা প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়নি। ফলে কোনো ধরণের সহায়তা ছাড়া লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী নানা পেশার মানুষজন। মানবিক এই বিপর্যয়ে বেসরকারিভাবে ত্রাণ সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি তেমন কাউকে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়ছেন লকডাউনে ঘরবন্দি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সরকারিভাবে ত্রাণ সহযোগিতা প্রদানে সরকার সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
শহরের নবীনগর এলাকায় অটোরিক্সা চালক ইব্রাহীম আলী বলেন, করোনা তো আর পেট মানে না। তাই বাধ্য হয়ে রিক্সা নিয়ে বের হই। পুলিশের বাধায় অটোরিক্সা চালানো যায় না। ঘরে কোনো চাল নেই, কোনো বাজার সদাই নেই। কামকাজ বন্ধ। পরিবারে এতোগুলো মানুষের খাবার যোগার করবো কি করে। সরকারিভাবে সাহায্য না পেলে না খেয়েই মরতে হবে আমাদের।
করোনার দ্বিতীয় ধাপের লকডাউনে এখনও কোনো সরকারি বরাদ্দ আসেনি বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারি কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি। বরাদ্দ আসলে ত্রাণ সহযোগিতা পৌঁছানো হবে।