তেলবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত ॥ সিলেটের সাথে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়নি, কুলাউড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে ট্রেন

18
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁওয়ে, চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়লে ৮টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এতে বন্ধ রয়েছে সিলেটের সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগ। ছবিটি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বিয়ালীবাজার, গুতিগাঁও থেকে তোলা। ছবি- মামুন হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার :
ফেঞ্চুগঞ্জে তেলবাহী একটি ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতির ঘটনায় সিলেটের সঙ্গে গতকাল রাত পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়ে আসেনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও ও বিয়ালীবাজারের গুতিগাঁও এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক খলিলুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ট্রেনটির ৮টি বগির ৭টিই লাইনচ্যুত হয়ে গেছে। এতে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের সাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। তিনি জানান, দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ৩টা থেকে তৎপরতা শুরু করে। বেশ কয়েকটি ট্রেন আটকা পড়েছে। তবে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় স্থানীয় যাত্রীদের নিয়ে ট্রেনটি কুলাউড়া স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বিকেল ৫টার দিকে ঢাকাগামী আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটিও সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এদিকে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তেল সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে জড়ো হন। ফেঞ্চুগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই এলাকায় পাহারা দিচ্ছে। এছাড়া এ ঘটনায় তদন্তে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁওয়ে, চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়লে ৮টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এতে বন্ধ রয়েছে সিলেটের সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগ। শুক্রবার রাত থেকে স্থানীয়রা ঝুঁকি নিয়ে তেল সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

কুলাউড়া জংশন রেল স্টেশনের মাস্টার মুহিব উদ্দিন আহমদ জানান, আন্ত:নগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন গতকাল শুক্রবার সকালে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে দুপুর সাড়ে ১২টায় স্থানীয় যাত্রীদের নিয়ে ট্রেনটি কুলাউড়া স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তিনি জানান, বিকেল ৫টায় ঢাকাগামী আন্ত:নগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনও সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
জানা গেছে, দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ট্রেনটির ১০টি লরি ছিটকে পড়ে রেললাইনের পাশে। লরি মাটিতে ছিটকে পড়ে মাটি ভেসে যায় তেলে। একদিকে চলছে উদ্ধার কাজ। অন্যদিকে তেল ছড়িয়ে পড়া এলাকাটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি থাকলেও জীবনের মোহ তুচ্ছ করে তেল সংগ্রহে ব্যস্ত জনতা। অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি থাকলেও তেল সংগ্রহে তুচ্ছ প্রাণের মায়া। ওয়াগন ছিটকে পড়ার পর জমিতে পড়া তেল কাপড় দিয়ে সংগ্রহের চেষ্টায় ছেলে বুড়ো সকলে। দুর্ঘটনায় এলোমেলোভাবে পড়ে থাকা রেললাইনের লোহার পাটাতন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ট্রেন দুর্ঘটনার পরপরই অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি উপেক্ষা করেও ওয়াগন থেকে তেল নিতে শুরু করেন স্থানীয় জনতা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সিলেটের সহকারি প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম বলেন, তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনার পর পুরো এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কোনোক্রমে আগুন ধরে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। আমরা উদ্ধার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছি। এ ধরণের দুর্ঘটনার তেল সংগ্রহ মানুষের মূল টার্গেট। যে কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বাধা নিয়ে লোকজন সরাতে পারছে না।