বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে জেলা ও মহানগর যুবলীগের প্রতিবাদ সভায় ব্যারিষ্টার তৌফিকুর রহমান ॥ ভাস্কর্য ইস্যুকে ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি বানাতে চায় মৌলবাদীরা

28
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ব্যারিষ্টার তৌফিকুর রহমান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ (ভিপি) এর সভাপতিত্বে ও সিলেট মহানগর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট লুৎফুর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এড. নাসির উদ্দিন খাঁন, সিলেট মহনগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন খসরু, মসিউর রহমান চপল, এডভোকেট শামীম আল সাইফুর সোহাগ, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারওয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মুকিত চৌধুরী, যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ব্যারিষ্টার তৌফিকুর রহমান, এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু ও চৌধুরী হাসান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ রাজেন, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খাঁন মুক্তি, সিলেট জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আহমদ।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ব্যারিষ্টার তৌফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা মুসলমান। তার চেয়ে বড় পরিচয় হলো আমরা বাঙালি। স্বাধীনতা যুদ্ধে দল মত বর্ণ নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমাদের সংবিধান রয়েছে। সে অনুযায়ী আমাদের দেশ চলবে। আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান। কিন্তু সর্বোপরি আমরা বাঙালি। আজকে আমরা যারা মুসলমান, নামাজ পড়ি, কোরআন পড়ি, আমরা যদি আমাদের ধর্মকে ঠিকমতো গ্রহণ করি এবং ধর্মকে অনুসরণ করি আমি এতটুকু বলতে পারি- আমাদের ধর্মে কখনও ফিৎনা ফাসাদের জায়গা নেই। হত্যার চেয়েও ফাসাদ বড়। তাহলে কেন আমরা ভাস্কর্যকে ইস্যু করে ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি করছি, ফিৎনা-ফাসাদ করছি।
তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াত দীর্ঘদিন দেশ শাসন করেছে। তখন তো ভাস্কর্য নিয়ে কোন আন্দোলন হয়নি। তাহলে এখন কেন আন্দোলন হচ্ছে, তাহলে বুঝতে হবে এতে তাদের উদ্দেশ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের অনুভূতির জায়গায় রয়েছেন বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা। রয়েছে বাংলাদেশ। আমরা ধর্ম ভীরু। আমরা আলেম না, আমরা ফতোয়া দিতে পারি না। আমরা বলতে পারি না কোনটা ঠিক, সঠিক। কিন্তু যারা আলেম, ফতোয়া দিচ্ছেন তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
তিনি বলেন, আপনারাই বলেন- ছবি তোলাই যদি নিষেধ হয় তাহলে তারা কেন ছবি তুলে। পাসপোর্টে কেন ছবি। নবীজি কি কখনও সব মুর্তি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আসুন আমরা আমাদের আচার-ব্যবহার দ্বারা, সত্যবাদী দিয়ে মানুষকে কাছে টানি।
ব্যারিষ্টার তৌফিকুর রহমান বলেন, এটা শুধু মাত্র ক্ষমতায় যাবার একটি পথ হিসেবে ভাস্কর্য ইস্যু তৈরী হয়েছে। আজ বিএনপি, জামায়াত তো কিছু বলে নাই। তারা পেছন থেকে দুয়েক জন হুজুরকে লেলিয়ে দিয়েছে। মুসলমানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে একদল ক্ষমতায় যেতে চাইছে।
যেকোনো ধর্মীয় অপব্যাখ্যার রুখে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা শান্তির পথে চলতে চাই। কাউকে আঘাত করতে চাই না। কিন্তু আমরা দুর্বল নয়। কেউ আমাদের আঘাত করলে পাল্টা আঘাত করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
সিলেট মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সব হুজুরদের বিরুদ্ধে আমাদের বক্তব্য নয়, সেই সব হুজুরদের বিরুদ্ধে আমাদের বক্তব্য যারা দেখেও না দেখার ভান করছেন। ইসলাম ধর্ম শান্তিপূর্ণ। এতে ফিৎসা ফাসাদের কোন জায়গা নেই। ভালবাসা দিয়ে আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) ইসলামকে বিজয় করেছেন। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে ভাস্কর্য ইস্যু তৈরী করে কিছু মৌলবাদীরা ফায়দা লুটতে চাইছে, ক্ষমতায় যেতে চাইছে। একদল ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে চাইছে। ক্ষমতায় যেতে চাইছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের একজন কর্মী থাকতে তা কোনোদিনও সম্ভব হবে না।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. নাসির উদ্দিন খান বলেছেন, মৌলবাদীরা দেশে উশৃঙ্খল সৃষ্টি করতে চাইছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর করেছে। বঙ্গবন্ধু প্রেমীদের বুকে আঘাত করেছে। এটা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। মৌলবাদীরা বাংলাদেশে উত্তাল সৃষ্টি করতে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক মুসলমান দেশে ভাস্কর্য রয়েছে। বাংলাদেশেও ভাস্কর্য থাকবে। তিনি হুজুরদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এসব বন্ধ করুন। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের মাঝে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করবেন না।
আমি বলছি, এদেশে ভাস্কর্য থাকবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য রাখবে। বিজ্ঞপ্তি