দুর্গাপূজার আজ মহানবমী

14
শারদীয় দুর্গা পূজার অষ্টমীতে নগরীর নাইওরপুলে বলরাম জিউ'র আখড়ায় অঞ্জলি প্রদান করছেন ভব্দবৃন্দ।

স্টাফ রিপোর্টার :
পাঁচদিনব্যাপী শুরু হওয়া হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আজ রবিবার ৪র্থ দিনে মহানবমী। মন্ডপে মন্ডপে বাজবে বিদায়ের সুর। কাল সোমবার দশমী শেষে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে পাঁচদিনব্যাপী এ দুর্গা উৎসবের।
গতকাল শনিবার কল্পারম্ভ আর সন্ধিপূজার মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে সনাতম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার তৃতীয় দিন ‘মহাঅষ্টমী’। সকালে ষোড়শ উপাচারে অনুষ্ঠিত হয় দেবীর পূজা। ১০৮ পদ্ম এবং প্রদীপ দিয়ে দুর্গতিনাশিনী দুর্গার আরাধনা করা হয়। বেশিরভাগ ভক্ত এবার অঞ্জলি নিয়েছেন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে কিছু দর্শনার্থী অবশ্য মন্দিরে উপস্থিত হয়ে ভোগ নিবেদন করে উপবাসে অঞ্জলি গ্রহন করেছেন। এদিকে ষষ্ঠী থেকে সপ্তমী হয়ে অষ্টমীতেও ছিল বৃষ্টি। দিনভর থেমে থেমে বাদলা হাওয়া মন্ডপে যেতে বাঁধা সৃষ্টি করেছে। তবুও উৎসব বলে কথা। অনেকেই বৃষ্টির মধ্যে এসেছেন মন্ডপে। ভোগ দিয়েছেন। মায়ের পায়ে দিয়েছেন পদ্ম।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকানুযায়ী, আজ রবিবার ভোর ৫টা ১৭ মিনিট থেকে সকাল ৭ টার মধ্যে দুর্গাদেবীর মহা নবমী কল্পারম্ব ও বিহিত পূজা প্রশস্ত। অনেকের বিশ^াস মহানবমীর দিন হচ্ছে দেবী দুর্গাকে প্রাণ ভরে দেখে নেয়ার ক্ষণ। এই দিন অগ্নিকে প্রতীক করে সব দেবদেবীকে আহুতি দেয়া হয়। অগ্নি সব দেবতার যজ্ঞভাগ বহন করে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে থাকেন। এই দিনই দুর্গাপুজার অন্তিম দিন। পরের দিন কেবল বিজয়া ও বিসর্জনের পর্ব। নবমী নিশিথে উৎসবের রাত শেষ হয়। নবমী রাত তাই বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়। এ সব বিবেচনা করে অনেকেই মনে করেন নবমীর দিন আধ্যাত্মিকতার চেয়েও অনেক বেশি লোকায়ত ভাবনায় ভাবিত থাকে মন।
এবছর করোনা মহামারীর কারণে সংক্রমণ এড়াতে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বিধায় এবারের দুর্গোৎসবকে ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। সন্ধ্যায় আরতির পরই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে পূজামন্ডপ। থাকছে না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা। জনসমাগমের কারনে সাস্থ্যবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই দুর্গা পূজায় আগেই প্রসাদ বিতরণ ও বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চন্ডীপাঠ, বোধন এবং দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে ২২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় বাঙালির শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার দেবী এসেছেন দোলায়, যাবেন হাতিতে চড়ে।
এ বছর সিলেটে সাড়ে ৫ শতাধিক পূজা মন্ডপে প্রশাসনের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে সিলেট জেলায় পারিবারিক ও সার্বজনীন মিলিয়ে ৫২০ টি এবং সিলেট মহানগরে ৬৪ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর সিলেট জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৬০৮ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ হিসেবে এবার পূজা মন্ডপের সংখ্যা কমেছে ২৪ টি।