সুনামগঞ্জে আবারো পানি বাড়ার শংকা, বাড়ছে দুর্ভোগ

15

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও পানি ধীর গতিতে কমায় দুর্ভোগ বেড়েই চলছে বানবাসী মানুষদের। তৃতীয় দফা বন্যায় টানা ১ মাস সময়ের উপরে পানিবন্দি রয়েছেন জেলার কয়েক লাখ মানুষ।
দুর্ভোগ আর ভোগান্তির নিরসনের শেষ না হতেই ফের দুঃসংবাদ দিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভারত হিমালয়ের পাদদেশে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কায় আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সুরমার সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানির বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানানো হয়েছে এক বিজ্ঞতিতে। ফলে ৪র্থ দফায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়ে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বানভাসী মানুষ।
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয় ২৫ জুন। এর সপ্তাহখানেক পর পরিস্থিতির যখন উন্নতি হচ্ছিল তখন ১০ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দেয়। এতে জেলার সবকটি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ায় লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন। বন্যায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনো জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর, ছাতক ও জামালগঞ্জ উপজেলার সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতি থাকাকালীন তৃতীয় দফয়া ২১ জুলাই বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। যার ভয়াবহতার মাত্রা ছড়িয়ে পড়ে সর্বক্ষেত্রে। টানা ১ মাস উপরে সময় বন্যা পরিস্থিতি জনদুর্ভোগে পরিণত হয়।
২৭ জুলাই (সোমবার) সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায় ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় এলাকা পশ্চিম বঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা এলাকায় অতিবৃষ্টি বা ভারীবৃষ্টিপাতে সম্ভাবনা থাকায় আগামী ২৪ ঘন্টায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি হতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে জানানো হয়।
তৃতীয় দফা বন্যায় সুনামগঞ্জে ১ লাখ ৮ হাজার ১২৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ৪০ কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে মাছ খামারীদের বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ। প্রায় ৫০০ কোটি টাকার সড়ক পথে ক্ষতি হয়েছে এমন তথ্য দিয়েছে এলজিইডি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ। দীর্ঘস্থায়ি এই বন্যায় সুনামগঞ্জে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে।
সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফুল মিয়া বলেন, ৩য় দফা বন্যাসহ টানা ১ মাস সময় ধরে পানিবন্দি রয়েছেন আমার ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। বন্যায় মানুষের বসতঘর, রাস্তাঘাট, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে হচ্ছে বানবাসী মানুষের।
বন্যার্ত মানুষের সাহায্যে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। তবে ধীর গতিতে পানি কমায় মানুষের দুর্ভোগ কমছে না।
ভারতের হিমালয় পাদদেশে অতিবৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকায় আগামী ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।