২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ আক্রান্ত

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে এক দিনে আরও ৬৬৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ। এর ফলে প্রাণসংহারি ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৪৫৫ জন।
রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুইজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ১৭৭ জন।
রবিবার বেলা আড়াইটায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে যুক্ত হয়ে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে ৬৬৫ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের পর এটি একদিন সর্বোচ্চ আক্রান্ত। একই সময়ে আরও দুইজন করোনায় মারা যাওয়ায় এই সংখ্যাটা ১৭৭ জন। মারা যাওয়া দুজনই ঢাকার বাহিরের। এদের একজন রংপুরের অন্যজন নারায়ণগঞ্জের। বয়স বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে। অপরজনের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির তৈরি করা গাইডলাইন অনুসারে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৬৩ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের মধ্যে ৬২৪ জন। ঢাকার বাইরে অন্য বিভাগীয় শহরে ৪৩৯ জন সুস্থ হয়েছেন।
নাসিমা সুলতানা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৬৫ জন। মোট আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ৬৩৭ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে নয় হাজার ৭৩৮টি। ঢাকার ভেতরে রয়েছে তিন হাজার ৯৪৪টি। ঢাকা সিটির বাইরে শয্যা রয়েছে পাঁচ হাজার ৭৯৪টি। আইসিইউ সংখ্যা রয়েছে ৩৪১টি, ডায়ালাসিস ইউনিট রয়েছে ১০২টি।
গত বছরের শেষ দিন চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের রোগী বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত মাসের ৮ তারিখে।
সেদিন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ।
তাদের মধ্যে দুইজন ইতালি থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। অপর একজন তাদের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, আক্রান্তদের মধ্যে দুইজন ব্যক্তি দেশের বাইরে থেকে এসেছেন। দেশে আসার পর তাদের লক্ষ্মণ ও উপসর্গ দেখা দিলে তারা আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করেন। পরে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।
ইতালি থেকে আসা ওই দুইজন দুইটি আলাদা পরিবারের সদস্য ছিলেন। তাদের নমুনা সংগ্রহের সময় পরিবারের আরও চারজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই চারজনের মধ্যে একজন নারীর করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এর পরবর্তী কয়েকদিন ধরে আর নতুন কোন রোগী পাওয়ার খবর জানায়নি আইইডিসিআর।
১৩ই মার্চ আইইডিসিআর জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। নতুন রোগী পাওয়া যায়নি।
১৮ মার্চ আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এরপর থেকে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে আক্রান্ত ও মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা।