পুলিশ-র‌্যাব এর সাথে পৃথক বন্দুক যুদ্ধে বিশ্বনাথে ডাকাত ও গোলাপগঞ্জে সন্ত্রাসী নিহত

18
বিশ্বনাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত ডাকাত ফটিক উরফে লিটন।

স্টাফ রিপোর্টার :
বিশ^নাথ ও গোলাপগঞ্জে র‌্যাব ও পুলিশের সাথে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় এক সন্ত্রাসী ও এক ডাকাতসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : বিশ্বনাথে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতিকালে পুলিশ ও ডাকাত দলের বন্দুকযুদ্ধে ফটিক ওরফে লিটন (৪০) ডাকাত নিহত হয়েছে। সে উপজেলার নওধার পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিছ আলীর ছেলে। গতকাল শনিবার ভোররাত সাড়ে ৩টায় বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর বাইপাস সড়কের সুড়ির খাল নামক স্থানে ডাকাতিকালে পুলিশ ও ডাকাতদলের বন্দুক যুদ্ধে সে নিহত হয়। বন্দুক যুদ্ধেও ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন বিশ্বনাথ থানার এসআই মিজানুর রহমান, কনস্টেবল চন্দন গৌর ও কনস্টেবল রাসেল দাস। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের তিনজনকে সিলেট কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় অজ্ঞাতনামা হিসেবে ফটিক ডাকাতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় ছবি দেখে শনিবার বিকেলে প্রথমে থানা ও পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন ফটিকের স্ত্রী হালিমা বেগম। সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে নিহত ফটিকের লাশ গ্রহণ করে বাড়িতে দাফনের ব্যবস্থা করছেন বলে জানিয়েছেন হালিমা। ফটিককে নির্দোশ দাবি করে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্বামীকে যারা আটক করেছিলেন তারাই হত্যা করেছেন।
তবে, হালিমার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা। তিনি বলেন, আমরা অজ্ঞাতনামা হিসেবে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠাই। বিকেলে হালিমা নামের এক নারী এসে তার স্বামী দাবি করলে তাকে সিলেট হাসপাাতলে লাশ শনাক্তের জন্য পাঠালে জানতে পারি নিহত ব্যক্তি আন্ত:বিভাগীয় ডাকাত দলের সদস্য ফটিক ডাকাত। যার বিরুদ্ধে বৃহত্তর সিলেটে ১৫ থেকে ১৮টি অস্ত্র ও ডাকাতি মামলা রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, শনিবার ভোররাত সোয়া ৩টার দিকে বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কের সুড়ির খাল এলাকায় ডাকাতির খবর পায় থানা পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে ওসি শামীম মুসা ওই এলাকায় টহল ডিউটিতে থাকা এসআই মিজানুর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠান। এসময় তিনি (ওসি) আরও একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে রওয়ানা হন। দুই কনস্টেবলসহ এসআই মিজানুর রহমান ভোর সাড়ে ৩টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্রই সড়কের দু’পাশ থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় ১৫/২০জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল। এতে বুকে ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন এসআই মিজান। আহত হন কনস্টেবল দু’জনও।
এর ১৫মিনিট পর ওসিসহ ১২ সদস্যের অপর টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বাঁধে তুমুল যুদ্ধ। অর্ধঘন্টা গোলাগুলিকালে ১৫ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। এর মধ্যে ৩ রাউন্ড চাইনিজ রাইফেলের গুলি এবং ১২ রাউন্ড রাবার বুলেট। গোলাগুলির একপর্যায়ে ডাকাতদল পিছু হটলে রাস্তায় এক অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে জাানয়। পুলিশ ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এসময় নিহত লুঙ্গি পরা ওই অজ্ঞাতনামা যুবকের বাম হাতের পাশ থেকে একটি দেশীয় তৈরী পাইপগান ও লুঙ্গির ভাজ থেকে ৩ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে লাশ সনাক্ত করেন নিহত ফটিকের স্ত্রী হালিমা বেগম।
গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : গোলাপগঞ্জের কদুপুর এলাকায় র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে আলী হোসেন (৪০) নামের এক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। নিহত আলী হোসেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার কদুপুরে গ্রামের সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী আত্তর আলীর পুত্র। এ সময় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী। এ সময় একজন র‌্যাব সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গত শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
র‌্যাব-৯ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে একাধিক মামলার আসামি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী আলী হোসেনকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালালে সে তার দলবল নিয়ে গুলি ছুঁড়ে। এসময় র‌্যাব পাল্টা গুলি চালালে আলী হোসেন নিহত হয়।