যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেসে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর হুঁশিয়ারি ॥ বিপথে গেলে ছাড়ব না

13
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভাবমূর্তি সঙ্কটে থাকা যুবলীগের নেতাদের বঙ্গবন্ধুর নীতি ও ত্যাগের আদর্শ নিয়ে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, নেতৃত্বে আসতে হলে ত্যাগের মনোভাব থাকতে হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতি থেকে সবাইকে দূরে থাকতে হবে, এর বিরুদ্ধে অভিযানও অব্যাহত থাকবে। তবে চলার পথে কেউ যদি বিপথে যায়, সে যেই হোক আমি তাদের ছাড়ব না। তাদের প্রতি আমার কোন সহানুভূতি থাকবে না। কারণ দিনরাত মানুষের জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছি। এই দেশ কখনও ব্যর্থ হতে পারে না, এদেশকে আমরা সফল করে তুলেছি এবং সেই সফলতার পতাকা নিয়েই আমরা আরও সামনে এগিয়ে যাব, জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করব।
সারাদেশ থেকে আসা যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সবসময় সবাইকে মনে রাখতে হবে সততাই সবচেয়ে বড় শক্তি। একটা দেশ গড়ে তুলতে হলে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আমাদের যুব সমাজের মেধা, তাদের শক্তি, তাদের মননকে কাজে লাগানো। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবেÑ ভোগে নয়, ত্যাগেই হচ্ছে মহত্ব। কী পেলাম কী পেলাম না, সে চিন্তা না, মানুষকে কতটুকু দিতে পারলাম, কতটুকু মানুষের জন্য করতে পারলাম, সেটাই হবে রাজনীতিবিদের চিন্তা-ভাবনা। দুর্নীতি করে, সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী করে অনেক টাকা বানাতে পারে, এ টাকা দিয়ে জৌলুস করতে পারে, চাকচিক্য বাড়াতে পারে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের জিনিস পরে ঘুরতে পারেন। এতে হয়তো আত্মতুষ্টি পাওয়া যেতে পারে, মানুষ চেয়ে চেয়ে দেখতে পারে, কিন্তু মানুষের সম্মান পাওয়া যায় না, মানুষের হৃদয় জয় করা যায় না। একজন রাজনীতিবিদ যে হবে, তার জীবনে ত্যাগ ও মানুষের কল্যাণের আদর্শ থাকতে হবে।
শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে পৌনে এক ঘণ্টার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের নেতাদের ত্যাগের মন্ত্রে দীক্ষিত করার পাশাপাশি বিপথে গেলে তাঁর কঠোর অবস্থানের কথাও সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে বিগত সরকারগুলোর দুর্নীতিকে নীতি হিসেবে গ্রহণ, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-দুর্নীতির অভয়ারণ্য সৃষ্টি, বর্তমান সরকারকে বিপদে ফেলতে মিথ্যা দুর্নীতির ষড়যন্ত্রসহ বিএনপি-জামায়াত জোটের অপশাসন-দুঃশাসনের কথাও দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনে যুবলীগ নেতাকর্মীদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদর্শ নিয়ে চলতে হবে। আদর্শের মধ্য দিয়েই কিন্তু একটা সংগঠন যেমন গড়ে উঠে, দেশকেও কিছু দেয়া যায়। এই কথাটা সব সময় মাথায় রাখতে হবে। উড়ে এসে জুড়ে বসে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে এই সংগঠন গড়ে উঠে নাই। সংগঠনটি গড়ে উঠেছে নির্যাতিত মানুষ, শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করার লক্ষ্য নিয়েই। সেই আদর্শ থেকে কখনও যদি কেউ বিচ্যুত হয়ে যায়, তাহলে দেশকে কিছু দিতে পারে না।
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং জমকালো আয়োজনে যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর আদলে গড়ে তোলা দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল মঞ্চে বেলা ১১টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমেই জাতীয় সঙ্গিতের তালে তালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম। এরপর শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তুতি কমিটির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং তাঁকে ক্রেস্ট উপহার ও উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়। যুবলীগের প্রকাশনা প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন চয়ন ইসলাম ও হারুনুর রশীদ।
এরপরই মূল মঞ্চের পার্শ্বেই নির্মিত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বিশিষ্ট শিল্পী আনজুম মাসুদের পরিচালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ ও ভারতের জনপ্রিয় শিল্পী শুভ মিতার কণ্ঠে গানের সঙ্গে সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। এরপর যুবলীগের থিম সং ‘অনাবিল স্বপ্নের ঠিকানা, আওয়ামী যুবলীগ’ গানের সঙ্গেও কোরিওগ্রাফিতে অংশ নেন শিল্পীরা। ‘দেশের মেধা দেশেই ফলুক’ নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত মঞ্চ নাটকও উপস্থাপন করা হয়। একই সময় মঞ্চের পাশেই দেশের চার বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী অল্প সময়ের মধ্যে জলরং ব্যবহার করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত দুটি ছবি এঁকে তা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের পর শুরু হয় আলোচনা পর্ব। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলামের সভাপতিত্বে প্রথমেই শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেলাল হোসাইন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপনা করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ও বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সেখানে যুবলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। সম্মেলনে যুবলীগের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদরা ছাড়াও মন্ত্রিসভার সদস্য, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সারাদেশ থেকে আগত যুবলীগের বিপুলসংখ্যক কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা।
প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী লোভ-লালসার উর্ধে থেকে একজন রাজনীতিক কীভাবে আদর্শ নিয়ে চলতে পারেন, তা জানার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং জাতির পিতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা যেসব প্রতিবেদন তৈরি করেছিল, তা নিয়ে করা প্রকাশনাগুলোও পড়ার জন্য যুবলীগের নেতাকর্মীদের পরামর্শ দেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারেনি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কেন পারলাম? কারণ আমরা আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করেছি বলেই পেরেছি। বাংলাদেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। সারাবিশ্বের সামনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিস্ময়। আন্তর্জাতিক নেতারাই বলছেন, বাংলাদেশ হচ্ছে উন্নয়নের রোলমডেল। কিন্তু ৭৫ পরবর্তী সামরিক স্বৈরাচাররা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিজেরা ভোগ-বিলাসে মত্ত থেকেছে, নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। দেশের মানুষ থেকেছে শোষিত-বাঞ্চিত। তারা দেশের কোনই উন্নয়ন করতে পারেনি।
মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ সময় পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ সততার সঙ্গে মোকাবেলার বিষয়টিও যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেসে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের ওপর অনেকে বদনাম দিতে চেয়েছিল। এক পদ্মা সেতু নিয়ে যখন অভিযোগ এনেছিল বিশ্বব্যাংক, তখন আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। বলেছিলাম যে, নিজের অর্থায়নেই পদ্মা সেতু করব, আমরা আজ তা প্রমাণ করেছি নিজস্ব অর্থায়নেও আমরা করতে পারি। কারণ আমার কাছে সততাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি। বিশ্বব্যাংক কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নোবেল বিজয়ী গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বলেন, ‘দেখা গেল একটা ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়তে পারে না, এদিকে নোবেল প্রাইজ পায়। অথচ একটা ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়েন না। সেই পদ কেন বয়সের কারণে ছাড়তে হল, সেই প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করার জন্য আমেরিকায় গিয়ে ধরণা দিল। তারা আমাদের ওপর দোষ দিল দুর্নীতির। আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম এবং সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি।’
নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে খালেদা জিয়ার তুলনা! : এতিমের টাকা আত্মসাত ও দুর্নীতির মামলায় দ-িত খালেদা জিয়ার সঙ্গে আফ্রিকার কালো মানুষের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার বন্দিত্বের যে তুলনা বিএনপি নেতারা করেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী, যিনি এতিমের টাকা আত্মসাত করে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে, তাঁকে তুলনা করা হয় নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে! আমি মনে করি, এতে নেলসন ম্যান্ডেলাকে অপমান করা হচ্ছে। কারণ নেলসন ম্যান্ডেলা তাঁর জাতির স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে কারগারে ছিলেন। দুর্নীতি করে কারাগারে যাননি।’
এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়াসহ তাঁর পরিবারের বল্লাহীন দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এ ধরণের একজন নিকৃষ্ট (খালেদা জিয়া), যিনি ক্ষমতায় থাকতে গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের আইভী রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। একবার না বারবার চেষ্টা করেছে হত্যাকা-ে চালাতে। যারা অস্ত্র দিয়ে, অর্থ দিয়ে এদেশের সমাজকে ধ্বংস করেছে। যার ছেলে (তারেক রহমান) ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে সাজাপ্রাপ্ত, মানিলন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তাদের (খালেদা জিয়া) সঙ্গে এ ধরনের আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিদের তুলনা এরা (বিএনপি) কোন মুখে করে, সেটাই আমার প্রশ্ন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলের তীব্র সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা দেশের জন্য কিছুই করতে পারেনি। খুন করা, মানুষের ওপর নির্যাতন করা, অত্যাচার করাÑ এটাই তারা করতে পেরেছে। বিএনপির আমলাই ছিল জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস, বাংলা ভাই সৃষ্টি, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং এবং এ ধরনের নানা ঘটনা। সমস্ত বাংলাদেশ সারা বিশ্বে তাদের সম্মান হারালো। পাঁচ-পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। আসলে দুর্নীতি-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মানুষ খুন এটাই ছিল তাদের নীতি। তাদের কৃতকর্মের কারণেই দেশে জরুরী অবস্থা জারি হয়েছিল।
২০০৮ সালে কেন ২৯ সিট পেলেন? : বিএনপি-জামায়াত জোটে ৫ বছরের দুঃশাসন এবং পরবর্তী সামরিক সমর্থিত দুই বছরের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অবসানের পর ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। তারা আবার নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলে। ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন করেননি। বিএনপি যদি এতই জনপ্রিয় সংগঠন হয়ে থাকবে, তাহলে মাত্র ২৯টা আসন পেয়েছিল কেন? ওই নির্বাচন নিয়ে তো কোন কথা নেই।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমরা দেশকে সবদিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সমস্ত কর্মসূচীতে আছে একেবারে তৃণমূল মানুষেরা। তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই আমরা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। কাজেই সেভাবেই আমরা এদেশকে গড়ে তুলতে চাই। কাজেই সেখানে চলার পথে কেউ যদি বিপথে যায়, সে যেই হোক আমি তাদের ছাড়ব না। কারণ দিনরাত পরিশ্রম করি দেশের মানুষের জন্য। আর জাতির পিতা শুধু দেশকে স্বাধীন করে যাননি, মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য তিনি তাঁর বুকের রক্ত দিয়ে গেছেন। এই কথাটা আমাদের মনে রাখতে হবে। কাজেই এই দেশ ব্যর্থ হতে পারে না। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল ক্ষমতা ভোগের জন্য নয়, এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। দেশের মানুষ যেন ভাল থাকে, দেশের মানুষ যেন দুমুঠো খেয়ে-পরে ভালভাবে জীবনযাপন করতে পারে সেজন্যই যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে। তাই ক্ষমতা ভোগদখলের জন্য নয়। ক্ষমতা হলো মানুষকে কিছু দেয়ার জন্য। ইতোপূর্বে ক্ষমতাকে যারা ভোগদখল হিসেবে ব্যবহার করেছে তারা দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারেনি। তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করি বলেই ১০ বছরে মানুষকে অনেক কিছু দিতে পেরেছি। যারা ২৯ বছর রাষ্ট্র চালিয়েছে তারা কি দিতে পেরেছে? কিছু দিতে পারেনি। জনগণকে কিছু দিতে হলে দেশকে ভালবাসতে হয়। যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তারা দেশকে কিছু দিতে পারে না।